বিদ্যুতের লোডশেডিং প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তথাকথিত উন্নয়নের নামে সরকারের দুর্নীতির কারণে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সরকার এতো চিৎকার-চেঁচামেচি করছে সব সময় বলছে- আমরা বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে গেছি। বলা হচ্ছে, প্রয়োজনের তুলনায় উৎপাদন আরো বেশি হচ্ছে।
তিনি বলেন, গতকালকের ব্যাপারটা (লোডশেডিং) হচ্ছে অস্বাভাবিক ব্যাপার। হঠাৎ করে বিদ্যুৎ চলে গেছে সারাদেশে বেশিরভাগ এলাকায় ছিল না। প্রায় আট ঘণ্টা এই লোডশেডিং চলে। এর থেকে বোঝা যায় সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনের নাম করে বহু প্রজেক্ট করেছে, টাকা-পয়সা বানিয়েছে শেষ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে, এ ধরনের একটা বড় রকমের দুর্যোগের মধ্যে, বিপর্যয়ের মধ্যে জাতিকে তারা ফেলে দিয়েছে।
বুধবার দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য অসুস্থ ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি টেকনিক্যাল মানুষ নই, টেকনিক্যাল মানুষ যারা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে কাজ করেছেন তারা বলবেন। আমি শুধু এইটুকু বুঝি সরকার যে এতো চিৎকার করছে এবং বলছে তার সময়ে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুতের উন্নয়ন হয়েছে। অতিরিক্ত উৎপাদন হচ্ছে, প্রয়োজনের তুলনায় উৎপাদন বেশি হচ্ছে। আমরা বিভিন্ন সময়ে সেমিনার বক্তব্যে এই সব বিষয় নিয়ে কথা বলেছি যে সমস্যাগুলো কোথায় আছে। কিন্তু গতকালের বিষয়টা ছিল সম্পূর্ণ অস্বাভাবিক ব্যাপার যে, হঠাৎ করে সারাদেশে বিদ্যুৎ চলে গেছে। প্রায় ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিল সারাদেশ।
তিনি বলেন, ‘ব্ল্যাকআউটের ফলে নেট বন্ধ, সমস্ত কলকারখানা বন্ধ হয়েছে। পাম্প স্টেশন সেগুলোও বন্ধ হয়েছে, ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে। সন্ধ্যার দিকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কৃষিতে সেচের ব্যবস্থা করা যায়নি। যার ফলে সর্বক্ষেত্রে একটা অসহনীয় অবস্থা জাতি উপলব্ধি করেছে। এটার জন্য মূলত দায়ী সরকারের অপরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন প্রজেক্ট গ্রহণ করা, বিভিন্ন উন্নয়নের কথা বলা। শুধু অপরিকল্পিত নয়, একটা লক্ষ্য আছে সেটা হচ্ছে দুর্নীতি করা। সেই দুর্নীতির মাধ্যমেই এই সমস্ত তথাকথিত উন্নয়নের কথাগুলো বলে, কাজগুলো করে মানুষকে সর্বক্ষেত্রে এ দুর্ভোগ হচ্ছে। বিদ্যুতের এই যে বিভ্রাট, রাস্তার যে বিভ্রাট; টঙ্গী থেকে উত্তরা আসতে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা লাগে। সর্বেক্ষেত্রে উন্নয়নের নামে এই সমস্যাগুলো সৃষ্টি হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল সরকারকে দ্রুত পদত্যাগ করারও আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হবে। তাহলেই শুধু মাত্র আমরা এই ভয়াবহ লুটপাট করে যাওয়ার দুষ্টচক্র তৈরিকারী থেকে মুক্ত হব।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
নবচেতনা/আতিক