বিশ্বে যুদ্ধ চাই না, নিষেধাজ্ঞা চাই না’-এই কথা প্রধানমন্ত্রীর মুখে মানায় না বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেয়ার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘আজকে বড় বড় কথা বলছেন বিদেশে গিয়ে। মার্কিনদের ওখানে গিয়ে বলছেন, যে যুদ্ধ চাই না, নিষেধাজ্ঞা চাই না। কেউ চাই না যুদ্ধ পৃথিবীতে, কেউ চায় না নিষেধাজ্ঞা।
‘কিন্তু তার (প্রধানমন্ত্রী) মুখে এটা মানায় না। তিনি নিজে এদেশে এই হত্যার সঙ্গে জড়িত। সরকার যখন এই হত্যাগুলো করছে, গুম হয়ে গেছে ৬শ ওপরে মানুষ … ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম…।”
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে শত শত মানুষ তারা থানায় নিয়ে গিয়ে পঙ্গু করে দিয়েছে, সহস্রাধিক মানুষকে তারা হত্যা করেছে, এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং করেছে।
এই কারণে আজকে একটা অত্যন্ত এলিড ফোর্স র্যাব যারা দেশে সুনাম কুড়িয়েছিলো অপরাধ দমনের ক্ষেত্রে এই সরকারের অন্যায় আদেশ পালন করতে গিয়ে তাদেরকে আজকে নিষেধাজ্ঞা পড়তে হয়েছে, ৭ জন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা পড়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই আন্দোলন এই সংগ্রাম, এই আত্মদান, এই রক্তপাত –এটা বিএনপির জন্য নয়, এটা পুরো জাতির জন্যে। আজকে সমস্ত জাতি একটা মহাসংকটে পড়েছে। আজকে ওরা গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছে।
এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছে যে, পত্র-পত্রিকাগুলো কেউ সাহস করে সত্য কথাটা বলতে পারে না- এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে গেছে।
আজকে পত্র-পত্রিকায় আপনারা খেয়াল করে দেখবেন বেশ কতগুলো পত্রিকায় বলেছে যে, শহীদুল ইসলাম শাওন যাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, আওয়ামী পন্থি মিডিয়া বলছে যে, তাকে নাকী পেছন থেকে ইট মারাতে সে মারা গেছে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ সারাদেশে জুড়ে আমরা আন্দোলন করছি জনগনের সমস্যাগুলো নিয়ে। এই আন্দোলনে ইতিমধ্যে আমাদের চারজন তরুণ যুবক প্রাণ দিয়েছেন।
গত পরশু মুন্সিগঞ্জের একজন যুব দল কর্মী ঢাকা মেডিকেল কলেজে মারা গেছেন। তার (শহীদুল ইসলাম শাওন) ছোট্ট আট মাসের একটা বাচ্চা, স্ত্রী, বাবা-মা-এদেরকে বাঁচিয়ে রাখতে তাদের জীবন-ধারণের জন্য একটা অটো চার্জার চালাতেন।”
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখানে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে পুরোপুরিভাবে বিকৃত করা হচ্ছে। শুধু আংশিক নয়, পুরোপুরিভাবে একটা ভিন্ন নেরেটিভ একটা ভিন্ন ধারণা সৃষ্টি করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের মানুষ ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করেছিলো একদিনে নয়, দীর্ঘকাল ধরে সংগ্রাম হয়েছে তাদের স্বাধীনতার জন্যে, তাদের স্বাধিকারের জন্য।
সেই সংগ্রামে আমাদের অনেক ত্যাগী নেতা তাদের অবদান আছে, আত্মত্যাগ আছে। ওই দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্যে অনেকে প্রাণ দিয়েছেন। তাদের কথা কোথাও উল্লেখ করা হয় না।”
জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে স্বাধীনতা সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন রচনা প্রতিযোগিতা কমিটির উদ্যোগে পুরস্কার বিতরণীয় উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়। বিজয়ী প্র্রতিযোগীদের মধ্যে বিতরণ করা হয় স্মরক ক্রেস্ট ও সনদপত্র।
নবচেতনা /এমএআর