ফর্মে নেই বাংলাদেশ দল। টানা হারে এমন অবস্থা হয়েছে যে, নতুন অধিনায়কের কাঁধে চড়িয়ে দল পাঠিয়েছে জিম্বাবুয়েতে। অন্যদিকে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে টানা জয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের টিকিট পাওয়ার অনুপ্রেরণায় টগবগ করছে। তবু প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে, যে সিরিজে জয় ছাড়া আর কোনো ফল অনুমোদিত নয় বাংলাদেশের ক্রিকেট সমাজে।
নতুন অধিনায়ক নুরুল হাসানের চোখও সিরিজ জয়ে, ‘এখানে আমরা শিখতে আসিনি, জিততে এসেছি। ’ নতুন বাংলাদেশ ট্যাগলাইনও পছন্দ নয় তাঁর, ‘আমাদের দলে অভিজ্ঞতার অভাব নেই।
এখানে আমরা সবাই ছয়-সাত বছর ক্রিকেট খেলেছি। তাই দলটাকে নতুন বলা যাবে না। ’ এমনকি জিম্বাবুয়ে নিজেদের চেনা কন্ডিশনে ভালো ক্রিকেট খেলবে জেনেও একটাই চাওয়া নুরুলের, ‘আমরা জিততে এসেছি। কোনো অজুহাত দেব না। ’
তবে নানা কারণে সদ্য সাবেক অধিনায়ক মাহমুদ উল্লাহ ছাড়াও সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম নেই। তামিম ইকবাল কিছুদিন আগে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন।
এমন একটি দলকে পেয়ে স্বভাবতই এই সিরিজ নিজেদের করার ব্যাপারে আশাবাদী জিম্বাবুয়ে দল। অবশ্য পুরো শক্তির দল স্বাগতিকরাও পাচ্ছে না। চোটের কারণে পেসার ব্লেসিং মুজারাবানি ও চেন্ডাই চাতারাকে পাচ্ছেন না অধিনায়ক রেজিস চাকাভা।
কিন্তু ব্যাটিংয়ে পূর্ণশক্তি নিয়েই নামছে জিম্বাবুয়ে। আইসিসি টি-টোয়েন্টি কোয়ালিফায়ারে দারুণ ফর্ম দেখিয়েছেন দলটির ব্যাটাররা। অভিজ্ঞ সিকান্দার রাজা ব্যাটে-বলে রাজত্ব করেছেন।
সবচেয়ে বড় কথা, দলটির স্বীকৃত ব্যাটারদের টি-টোয়েন্টি স্ট্রাইক রেট ১২৬ থেকে ১৫০। অন্যদিকে বাংলাদেশের স্বীকৃত ব্যাটারদের স্ট্রাইক রেট ১০০-এর আশপাশে।
বাংলাদেশি ব্যাটারদের ফর্ম আরো নাজুক। সঙ্গে পাওয়ার হিটিংয়ে দুর্বলতা মিলিয়ে এই বিভাগটিই নুরুল হাসানের প্রধান দুশ্চিন্তা। তবে নতুন অধিনায়ক পুরনো একটি পথে হেঁটে এই সমস্যা থেকে বেরোতে চাইছেন, ‘আমরা আমাদের ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলবে। এভাবে খেলেও বাউন্ডারি, ওভার বাউন্ডারি মারা যায়। ’
হারারের উইকেটও অবশ্য বাংলাদেশের ব্যাটিং সামর্থ্যের সঙ্গে বেশ মানিয়ে যায়। হারারেতে প্রথম ইনিংসের গড় ১৬০ রান, যা বাংলাদেশের ব্যাটিং ছকের জন্য আদর্শ। পরিসংখ্যান ঘাঁটলে দেখা যাবে, এই পুঁজি বেশির ভাগ সময়ই যথেষ্ট প্রমাণ করেছেন বাংলাদেশি বোলাররা।
তবে আগে রানটা করতে হবে। টসজয়ী অধিনায়করা হারারেতে প্রথমে ব্যাটিংটাই পছন্দ করেন। তাতে দেড় শর বেশি রান তাড়া করার আত্মবিশ্বাসও ব্যাটারদের মনে থাকতে হবে। এটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের জন্য।
সেই অর্থে কোনো ব্যাটারই ভালো ফর্মে নেই। উল্টো আজ টি-টোয়েন্টি অভিষেকের চাপ নিতে হতে পারে পারভেজ হোসেন ইমনকে। লিটন দাসের সঙ্গে তাঁর ইনিংস শুরু করার সম্ভাবনা বেশি।
তিন নম্বরে এনামুল হক বিজয়ের নিজেকে প্রমাণ করার দায় আছে। মিডল অর্ডারের শুরুতেই নাজমুল হোসেনের ওপর ‘নজর’ থাকবে সবার। তাই আফিফ হোসেনকে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে। আর সবচেয়ে বড় দায়িত্ব তো নুরুল হাসানের। শুধু রান নয়, ম্যাচে প্রভাব ফেলবে, এমন ইনিংসের চাহিদাপত্র তিনি দিয়েছেন দলের ব্যাটারদের। সেই তালিকায় নিজেকেও রেখেছেন নুরুল।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এবারের সিরিজে বাংলাদেশের এটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ— নিছক রান নয়, সেই রানগুলো যেন দলের কাজে লাগে। নুরুলের অধিনায়কত্বের আজ অভিষেক হচ্ছে এই স্লোগান তুলে।