টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ছোট হাবিব পাড়ায় গত (৩ আগষ্ট) বুধবার আসামি ছিনতাই করে পুলিশকে মারপিটও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মামলা দায়েরের পর থেকে গ্রেফতার আতংকে নারী পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে ওই গ্রামের পাঁচশত পরিবার।
ঘটনায় জড়িত অনেকেই আত্মগোপনে চলে গেছেন। আবার ঘটনার সাথে জড়িত নেই এমন অনেকে গ্রেফতার ও হয়রানির ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এই গ্রামে সব দোকান পাট বন্ধ করে রেখেছে দোকানের মালিক। আবার এই সব দোকানে মালপত্র চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে বলে জানান দোকানদার।এক প্রবাসীকে পুলিশ আটক করে নিয়ে যাওয়ার পর তার বাসা ভাঙচুর করে স্বর্ণ লুট পাট করে নিয়ে গেছে বলে জানান ভুক্তভোগী পরিবার।
তবে কারা নিয়ে গেছে এই বিষয়ে নিশ্চিত করতে পারেনি প্রবাসী স্ত্রী ফাতিমা খাতুন। ঘটনার পরদিন ৪৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে টেকনাফ মডেল থানার এসআই সাইফুল ইসলাম রাফি বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।এই পর্যন্ত এই মামলার ১৭ জন আসামি আটক করেছেন পুলিশ।
শনিবার ছোট হাবিব পাড়া এলাকায় সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, কোনো পুরুষ মানুষ বাড়িতে নেই। বাড়ির নারী ও শিশুরা আতংকে রাত কাটাচ্ছে গ্রামের বেশির ভাগ পুরুষ শ্রমজীবী হওয়ায় পুলিশের ভয়ে কোনো কাজকর্ম করতে পারছে না। ফলে এলাকার সবার বাড়িতেই অর্থ সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
ছোট হাবিব পাড়া গ্রামের সিকদার, ইসালাম নুর বেগমসহ অনেকেই জানান, রাতে পুলিশ এসে বাড়ি তল্লাশি করে। রাতে তাদের স্বামীরা ভয়ে বাড়িতে থাকে না।ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা পুলিশের ভয়ে রাতে ঘুমাতে পারছে না। সর্বশেষ তাদের দাবি প্রকৃত আসামি আটক হোক এটা আমরা ও চাই কিন্তু যেন নিরপরাধী মানুষ হয়রানি না হন।
তবে ভয়ে মানুষ গ্রাম ছাড়া।কেন মানুষ গ্রাম ছাড়া হচ্ছে? এই প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, এই পর্যন্ত যতজন আটক করেছে সেখানে ও সেই ঘটানায় জড়িত নেই এমন ব্যক্তি আছে এর জন্য গ্রেপ্তাররে ভয়ে গ্রাম ছাড়া মানুষ।
ছোট হাবিব পাড়ার প্রবাসী মুহাম্মদ ইয়াসিনকে পুলিশ আটক করার অভিযোগ এনে তার স্ত্রী ফাতিমা খাতুন বলেন, শুক্রবার(৬ আগষ্ট) আসরের নামাজের পর ছোট হাবিব পাড়ায় মসজিদের সামনে থেকে আমার স্বামীকে পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়। আমি পুলিশকে জানাই আমার স্বামী সেই ঘটনার সাথে জড়িত নেই এবং ঘটনাস্থল থেকে আমার বাড়ি অনেক দূরে। আমি পুলিশকে বলি আমার স্বামী তিন মাস হয়েছে যে সৌদি আরব থেকে এসেছে। এই কথা বললে পুলিশ আমাকে কাগজ পত্র নিয়ে থানায় আসতে বলে। পরবর্তী কিছু জানায়নি পুলিশ।বেশি রাত হয়ে যাওয়ার কারনে পৌরসভা জালিয়া পাড়ায় আমার এক আত্মীয়ের বাসায় থেকে যায়। সকালে বাড়িতে গিয়ে দেখি দরজা খোলা এবং বাড়ির ভিতরে আলমারি ভাঙচুর দেখে আমি বেহুঁশ হয়ে যায়। পরবর্তী হুস ফিরে আসলে দেখি আমার আট ভরি স্বর্ণ,৯০ হাজার টাকা লুট পাট করে নিয়ে যায়।তবে কারা নিয়ে গেছে এই বিষয়ে নিশ্চিত করতে পারেনি প্রবাসী স্ত্রীর ফাতিমা খাতুন।
ছোট হাবিব পাড়ার বাসিন্দা ইসালাম বলেন, আবুল হোসেন নামের এক আসামিকে আটক করেছে পুলিশ সেই দিন রাতে তার দোকানের সব মালামাল লুট পাট করে নিয়ে গেছে অনুমান দুই লাখ টাকার মত মালামাল হবে।টাকা ছিল এক লাখ ৯০ হাজার টাকা তার দোকানে সেই গুলো ও নিয়ে যায় চুর এমন বিরল ঘটনা আমি কোন দিন দেখি নাই।
ছোট হাবিব পাড়ার সাবেক মেম্বার এমএ হামজালাল জানান, এলাকার সাধারণ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয় সে জন্য তিনি প্রশাসনের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত নয়, তাদের আতঙ্কিত হয়ে বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার কোন কারণ নেই। পুলিশ কাউকে হয়রানি করছে না। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশের গ্রেফতারি অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।