পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছেন, মিয়ানমার তার দেশে রোহিঙ্গা ফেরাতে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে সম্মত হয়েছিল। কিন্তু তার পরিবর্তে রাখাইন রাজ্যে চলছে লড়াই ও গোলাগুলি। দুর্ভাগ্যক্রমে আজ অবধি একজন রোহিঙ্গাও মিয়ানমারে ফিরে যায়নি।
শনিবার ভিয়েতনামের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামের চেয়ারম্যান ফাম বিন মিনহের সভাপতিত্বে ২৭তম আসিয়ান রিজিওনাল ফোরামের (এআরএফ) ভার্চুয়াল সম্মেলনে আবদুল মোমেন এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারে গণহত্যার হাত থেকে পালিয়ে আসা প্রায় ১১ লাখ নিপীড়িত মানুষকে মানবিক আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী চেতনায় গঠনমূলক কূটনীতির মাধ্যমে সংকট সমাধানে বাংলাদেশ আগ্রহী। মিয়ানমার আমাদের বন্ধুদেশ। তাই প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ মিয়ানমারের সঙ্গে তিনটি সমঝোতা স্বাক্ষর করেছে। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের যাচাই-বাছাইয়ের পরে ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়েছিল। তারা স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি এবং বাস্তুচ্যুত মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সম্মত হয়েছিল। তবে দুর্ভাগ্যক্রমে আজ অবধি কেউ মিয়ানমারে ফিরে যায়নি এবং অনুকূল পরিবেশ তৈরির পরিবর্তে রাখাইন রাজ্যে লড়াই ও গোলাগুলি চলছে।
আবদুল মোমেন আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, যদি এই সমস্যাটি দ্রুত সমাধান না করা হয় তাহলে এই সংকট উগ্রবাদের পকেটে পরিণত হতে পারে। যেহেতু সন্ত্রাসীদের কোনো সীমানা নেই। তাই এই অঞ্চলে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ার উচ্চ সম্ভাবনা রয়েছে- যা আমাদের শান্তিপূর্ণ, সুরক্ষিত ও স্থিতিশীল অঞ্চলের জন্য হুমকি।
তিনি বলেন, সুরক্ষার বিষয়ে মিয়ানমার সরকারকে বিশ্বাস করে না বলেই রোহিঙ্গারা মূলত তাদের স্বদেশে ফিরছে না। রোহিঙ্গাদের আস্থা ঘাটতি ও আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর লক্ষ্যে আমরা মিয়ানমারকে তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ চীন, রাশিয়া, ভারত বা তাদের পছন্দের অন্যান্য বন্ধু দেশ থেকে অ-সামরিক ও বেসামরিক পর্যবেক্ষকদের জড়িত রাখার পরামর্শ দিয়েছিলাম। এতে আস্থার ঘাটতি হ্রাস করতে পারে।
ড. মোমেন আরও বলেন, অসহায় রোহিঙ্গারা যেন সুরক্ষা এবং মর্যাদার সঙ্গে তাদের বাড়িতে ফিরতে পারে, সেজন্য আমরা এআরএফ অংশীদারদের কাছ থেকে এ বিষয়ে সমর্থন প্রার্থনা করছি।