অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেনকে আসামি করার আবেদন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহর আদালতে এ আবেদন করেন সিনহার বড়বোন ও সিনহা হত্যা মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। আবেদনটি আমলে নিয়ে আদেশের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন আদালত।
বাদীর আইনজীবী মোহাম্মদ মোস্তফা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আদালত আবেদনটি গ্রহণ করলেও এ বিষয়ে এখনও কোনো আদেশ দেননি। তবে যেকোনো সময় আদেশ হতে পারে।
বাদীর আবেদনে বলা হয়, সিনহা হত্যার আগে ও পরে পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনের সঙ্গে মামলার আসামিদের যোগাযোগ ছিল। পুলিশ সুপার আসামিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহায়তা করেছেন এবং এখনও করার প্রচেষ্টায় আছেন। একজন এসপি হয়ে সাবেক মেজর সিনহার গাড়িতে ইয়াবাসহ নানা মাদক পাওয়া যাওয়ার মিথ্যা তথ্য প্রচার করে মানহানি করেছেন। তিনি অপরাধীদের পক্ষে কারাগারে ডিভিশন চেয়ে পত্র দেন। তাই সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার স্বার্থে তাকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।
গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফের কাছে বাহারছড়া চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর সিনহা। ওই ঘটনায় সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস ৫ অগাস্ট কক্সবাজারের হাকিম আদালতে নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সেখানে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে ১ নম্বর এবং টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে ২ নম্বর আসামি করা হয়। মামলার পর ওসি প্রদীপসহ সাত পুলিশ সদস্য ৬ অগাস্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। অন্য দুই আসামি পলাতক।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপারকে আসামি করার কারণ সম্পর্কে বাদী শারমিন বলেন, কক্সবাজারের পুলিশ সুপারকে মামলার আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হলে ন্যায়বিচার পাব বলে আশা করছি।
মামলাটি র্যাব তদন্ত করছে। তারা মামলার ১৩ আসামিকে নানা মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এ পর্যন্ত মামলায় ১২ আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ওসি প্রদীপ কুমার দাশ জবানবন্দি দেননি। বর্তমানে মামলার ১৩ আসামির সবাই জেলা কারাগারে রয়েছেন।
এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি সোমবার তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তবে সেই প্রতিবেদনে কী আছে তা এখনও বলেনি মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার সকালে কক্সবাজার পৌঁছান সিনহার বড়বোন শারমিনসহ পরিবারের লোকজন। বিমানবন্দর থেকে আদালত পাড়ার আইনজীবী চেম্বারে যান তারা। সেখান থেকে বিচারক তামান্না ফারাহর আদালতে আদালতে যান শারমিন।