টেকনাফ থানা পুলিশ কর্তৃক মুছা আকবর (৩৫) ও সাহাব উদ্দিনকে ক্রসফায়ারে হত্যার অভিযোগে টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে একদিনে আরও দুটি মামলার আবেদন করা হয়েছে।
বুধবার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (টেকনাফ-৩) হেলাল উদ্দীনের আদালতে এই দুই মামলার আবেদন করা হয়েছে।
নিহত মুছা আকবরের স্ত্রী শাহেনা আকতার ও সাহাব উদ্দীনের বড়ভাই হাফেজ আহামদ বাদী হয়ে এই দুই মামলার আবেদন করেন। দুই মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবীরা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
এদিকে একটি মামলায় হোয়াইক্যং ফাঁড়ির ইনচার্জ মশিউর রহমানকে প্রধান ও প্রদীপ কুমার দাশকে ২নং এবং অন্য মামলায় এসআই দীপক বিশ্বাসকে প্রধান এবং ওসি প্রদীপকে ৩নং আসামি করা হয়।
নিহত মুছা আকবরের মামলা এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পুলিশ হোয়াইক্যং ইউনিয়নের খারাইঙ্গ্যা ঘোনার নিহত মুছা আকবরের বড় ভাই আলী আকবরের বাড়ি পুড়িয়ে দেয় টেকনাফ থানার একদল পুলিশ।
এ ঘটনায় কক্সবাজার প্রেস ক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করে তাদের পরিবার। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ২৮ মার্চ রাতে আবু মুছাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে মুছার পরিবারের কাছে ২০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। তিন লাখ দিতে সামর্থ্য হয় মুছার পরিবার। তিন লাখ টাকা নিয়েও ওই দিন ভোরে মুছা আকবরকে ক্রসফায়ারের নামে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ।
বাদীপক্ষের আইনজীবী রিদুয়ান আলী বলেন, ফৌজদারি মামলার এজাহারটি আমলে নিয়েছেন আদালত এবং ওই ঘটনা সংক্রান্ত কোনো মামলা হয়েছে কিনা, তা আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে আদালতকে জানাতে টেকনাফ থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
অন্যদিকে নিহত সাহাব উদ্দীনের মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল টেকনাফ থানার এসআই দীপক বিশ্বাসের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সাহাব উদ্দীনকে তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে ক্রসফায়ার না দেয়ার কথা বলে তার পরিবার থেকে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হয়।
পরিবার ৫০ হাজার টাকা দেয়। কিন্তু আরও ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা না দেয়ায় ২০ এপ্রিল রাতে কাঞ্জরপাড়া ধানক্ষেতে ক্রসফায়ারের নামে সাহাব উদ্দীনকে গুলি হত্যা করা হয়।
এই মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী শাহাআলম জানান, ফৌজদারি মামলার এজাহারটি আমলে নিয়েছেন আদালত এবং ওই ঘটনা সংক্রান্ত কোনো মামলা হয়েছে কিনা, তা আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে আদালতকে জানাতে টেকনাফ থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
বুধবার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (টেকনাফ-৩) হেলাল উদ্দীনের আদালতে এ দুই মামলার ওপর উল্লিখিত আদেশ হয়।