বগুড়ার দুপচাঁচিয়া পৌরসভার বিএনপি সমর্থিত মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ও সচিব কার্তিক চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের জাল স্থগিতাদেশ দাখিল করে ১০ বছর দুর্নীতির মামলার কার্যক্রম বন্ধ রাখার অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি দুদক ঢাকা কার্যালয়ের আইনজীবী জালিয়াতির বিষয়টি টের পেয়ে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে বগুড়ার পিপিকে চিঠি দেন। এ নিয়ে ২৬ আগস্ট স্পেশাল জজ আদালতে আবেদন করা হলে আজ শুনানির দিন ধার্য করা হয়।
দুদক বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ের পিপি আবুল কালাম আজাদ বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। অভিযোগ প্রসঙ্গে মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা হাইকোর্টের সঠিক স্থগিতাদেশ জমা দিয়েছি। আদালতের সঙ্গে কোনো রকম জালিয়াতি করিনি।
আদালত ও এজাহার সূত্র জানায়, ২০০৭ সালে জাহাঙ্গীর আলম (বর্তমান মেয়র) দুপচাঁচিয়া পৌরসভার মেয়র ও কার্তিক চন্দ্র দাস সচিব থাকাকালে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। জেলা প্রশাসকের তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত মেয়র বেলাল হোসেন ওই বছরের ২৩ অক্টোবর মেয়র ও সচিবের বিরুদ্ধে ১৩ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের মামলা করেন।
পরে মামলাটি দুদক বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। শুনানি ও সাক্ষ্য গ্রহণের কার্যক্রম শুরু হয়- এমন অবস্থায় মেয়র জাহাঙ্গীর আলম হাইকোর্টে মামলাটি বাতিলের আবেদন করলে তা নাকচ হয়ে যায়। অথচ আসামিরা মিস কেসের (নং-২০১৪৪/১০) মামলাটি হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়েছেন মর্মে ২০১০ সালের ৮ ডিসেম্বর বগুড়ার আদালতে কাগজপত্র দাখিল করেন। এরপর থেকে মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত হয়ে আছে।
এদিকে দুদক ঢাকা কার্যালয়ের আইনজীবীরা অনুসন্ধান করে জানতে পারেন, হাইকোর্টের ওই মিস কেসটি বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার মামলার (নং-১৭ (১০)২০০৭ সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়। এটি ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার মামলা (নং-২৯(৭)২০০৭। হাইকোর্টের প্রদান করা ২০১০ সালের ৮ ডিসেম্বরের স্থগিতাদেশটি বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার মামলা সংশ্লিষ্ট নয়।
দুদক বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ের পিপি আবুল কালাম আজাদ এবং মামলার বাদী ও পরবর্তীতে সাক্ষী বেলাল হোসেন জানান, দুদকের আইনজীবীরা জালিয়াতির মাধ্যমে মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে বগুড়ার পিপিকে চিঠি দিয়েছেন। উল্লেখ্য, মেয়র জাহাঙ্গীর আলম দুপচাঁচিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।