ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নাম-পদবীর ইংরেজি শব্দ পাল্টে বাংলা পারিভাষিক শব্দ ব্যবহারের প্রস্তাব নিয়ে মত পরিবর্তন করেছে নির্বাচন কমিশন।
এর ফলে প্রস্তাবিত ‘স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান নির্বাচন পরিচালনা আইন-২০২০’ আইনে সিটি করপোরেশন-পৌরসভা-ইউনিয়ন পরিষদের নাম, মেয়র ও চেয়ারম্যানের নতুন বাংলা রূপ করার প্রস্তাব রাখা হচ্ছে না।
সোমবারের ‘মুলতবি কমিশন সভায়’ এ সংক্রান্ত প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশনে ইতোমধ্যে নাম-পদবির বাংলায় পরিবর্তন নিয়ে একজন নির্বাচন কমিশার ‘নোট অব ডিসেন্ট’ও দিয়েছিলেন। কয়েকজন নির্বাচন কমিশনার এ নিয়ে দ্বিমত পোষণ করলেও তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেনি।
প্রস্তাবিত আইনের প্রাথমিক খসড়ায় সিটিকে মহানগর, পৌরসভাকে নগরসভা, সিটি মেয়রকে মহানগর আধিকারিক বা মহানগরপতি, পৌর মেয়রকে পুরাধ্যক্ষ বা নগরপতি, ইউপিকে পল্লী পরিষদ এবং পল্লী, উপজেলা ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে প্রধান করার প্রস্তাব করা হয়েছিল। তা এখন আর থাকছে না খসড়ায়।
এ বিষয়ে সোমবার নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্থানীয় সরকারের আইনগুলোকে একসঙ্গে সামষ্টিক রূপে নেওয়ার জন্য একটা খসড়া উপস্থাপন করেছে ইসি সচিবালয়। তাতে নাম-পদবি বাংলায় করারও প্রস্তাব ছিল। আমরা বলেছি, নাম পাল্টানোর এখতিয়ার ইসির নয়। স্থানীয় সরকার যদি নাম-পদবি পরিবর্তন করে, তাহলে সেটা করতে পারে। এ বিষয়টি নীতিগতভাবে আমরা একমত হয়েছি।’
খসড়াটি এখনও কমিশন পর্যালোচনা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি কিছু। খসড়াটি ওয়েবসাইটে প্রকাশের পর সবার মতামত নিয়ে চূড়ান্ত করা হবে।
এ প্রসঙ্গে ইসি রফিকুল বলেন, ‘কমিশন প্রস্তাবগুলো অনুমোদন দেবে সবার মত নিয়ে। এর আগেই নোট অব ডিসেন্ট কেন? আরও অনেক পথ বাকি। খসড়াটি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সরকার দেখবে। তারপর সংসদে যাবে। প্রস্তাব দিলেই তো হলে না; শেষ পর্যন্ত বিষয়টি চূড়ান্ত হবে সংসদে।’
সোমবারের বৈঠক সিইসি কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। তবে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দেওয়া নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার অনুপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান নির্বাচন পরিচালনা আইন-২০২০’ খসড়া নিয়ে বৈঠক শেষে ইসি সচিব মো. আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, নাম ও পদবি প্রচলিত শব্দগুলোই রাখা হবে। এক্ষেত্রে বর্তমানে ব্যবহৃত নাম ও পদবিতে কোনো পরিবর্তন হবে না। এটি একটি প্রস্তাবনা। তার উপরেই আলোচনা হচ্ছে। পরিবর্তন, পরিবর্ধন হতে পারে।”
শিগরগিরই খসড়াটি ওয়েবসাইটে তোলার পর সবার মতামতের ভিত্তিতেই প্রস্তাব চূড়ান্ত করে সরকারের কাছে পাঠানো হবে বলে জানান ইসি সচিব।