ঝুঁকিতে প্রাইমারী স্কুল, ঈদগাহ মাঠ , দুর্গা মন্দির, গীর্জা, ঘর নদীগর্ভে আদিবাসীদের কবরস্থান
দিনাজপুর সদরের আত্রাই নদীতে থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন
দিনাজপুর সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের উলটগাঁওয়ে আত্রাই নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবীতে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি অভিযোগ করেছে এলাকা বাসী।
জানা যায় অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে কয়েকমাসের ব্যবধানে ওই এলাকার কয়েক একর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বহু গাছ ভেঙ্গে নদীতে পড়ে ভেসে গেছে। নদী ভাঙ্গণের ফলে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের গির্জা ঘর ঝুকি রয়েছে। ইতিমধ্যে আদিবাসী সম্প্রদায়ের একটি কবরস্তান নদী গর্ভের বিলীন হয়ে গেছে। বালু পরিবহন কাজে বড় ট্রাক ব্যবহারের ফলে কয়েক হাজার এলাকাবাসীর চলাচলের রাস্তাটিও ভেঙ্গে গেছে।
এ বিষয়ে প্রতিকারের জন্য গ্রামের শতাধিক বাসিন্দা জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগে উল্লেখ্য করা হয়, উক্ত মৌজায় ২ বছর ধরে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের কারণে বসতবাড়ীর ও কৃষি জমির চরম ক্ষতি হয়েছে। এখন প্রায় বাড়ীঘর বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এই এলাকাটি সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় ও আদিবাসী-খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের লোকজনের বসবাস। এখানে ১ টি গির্জাঘর, ১টি ঈদগাহ মাঠ, ১টি দুর্গা মন্দির ও ১টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালযে নদী ভাঙ্গনের ফলে ঝুকিতে রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অবৈধ ড্রেজার মেশিন ব্যবহারের ফলে নদীর ২ পারের অসংখ্য বাড়ীঘর ভেঙ্গে গেছে নদী গর্ভে। দীর্ঘ ৫ বছর পূর্বে ১ একর জমির উপর একটি ঈদগাহ মাঠ স্থাপিত করা হয়। কিন্তু নদী ভাঙ্গনের ফলে সেটি এখন অর্ধেক পরিমাণে নেমে এসেছে। এছাড়া নদী ভাঙ্গণের ঝুঁকিতে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ১টি দুর্গা মন্দির, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের গির্জা ঘর রয়েছে।
এলাকাবাসী দিজেন চন্দ্র জানান নদী ভাঙ্গনের ফলে আদিবাসীদের কবরস্থান ভেঙ্গে নদীতে চলে গেছে। নদীর ধারে গেলে আদিবাসীদের পুরাতন কবরগুলো দেখা যায়। সেখানে দাফনের সময় লাশের পরিহিত কাপড় দেখা যায়। এলাকার শিশুদের জন্য একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। সেখানে শিশুদের খেলাধুলার জন্য একটি বড় মাঠ ছিল। কিন্তু নদী ভাঙ্গনের ফলে খেলার মাঠটিও শেষ হয়ে গেছে। এছাড়াও অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের পর ১০ চাকার বড় ড্রাম ট্রাক দিয়ে বালু নিয়ে যাওয়া হয়। বড় ড্রাম ট্রাক চলাচলের ফলে কয়েক হাজার এলাকাবাসীর চলাচলের একমাত্র পাকা রাস্তাটি ভেঙ্গে পড়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী জানান আমরা অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করায় আমাদেরকে একটি মিথ্যা মামলা দিয়েছে। তাদের থাকার একটি টিনের ঘর ও ড্রেজার মেশিনে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছি বলে মিথ্যা মামলা করেছে। অথচ তাদের ড্রেজার মেশিনের কিছু হয় নি। এমনকি তাদের থাকার ঘরটি আগের মতই আছে। অথচ আমরা মামলার আসামী হয়ে গেছি। এদিকে প্রশাসনে বার বার অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছি না।
দৈনিক নবচেতনার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন