টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী উপজেলার বীরবাসিন্দা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে চলছে অবাদে ঘুষ গ্রহণ। জানাযায়- বীরবাসিন্দা ইউনিয়ন উপ-সহকারি ভূমি কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান ওই কার্যালয়ে যোগদানের পর হতে ৬ মাস যাবৎ ভূমি (মিউটেনেশন) খাজনা খারিজ করতে প্রতিটি খারিজ বাবদ ৮- ১০ হাজার টাকা করে ঘুষ নিচ্ছেন। ভূমির মালিকানা পরিবর্তন/হস্তান্তর করতে হলে খাজনা খারিজ করতে হয়।
বীরবাসিন্দা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে খাজন খারিজ করতে গেলে ৮- ১০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হচ্ছে। ঘুষ ছারা কোন খাজন খারিজের প্রস্তাব সহকারী কমিশনার ভূমি কালিহাতী বরাবরে পাঠানো হচ্ছে না। কেউ ঘুষ না দিতে চাইলে ওই ভূমি কর্মকর্তা নানা টাল বাহানা করে থাকেন। কাগজ পত্র ঠিক থাকলেও তিনি ভিন্ন ভিন্ন অপকৌশল অবলম্বন করতে কাল ক্ষেপন করেন না বলে ভূক্তভোগীরা জানিয়েছেন। ওই ভুমি কার্যালয়ে সার্বক্ষনিক ২/৩ জন দালাল বসে থাকে। তাদের কাজ হলো কোন জমি মালিক খাজনা-খারিজ করতে আসলে তাদের কাথে ঘুষের টাকার চুক্তি করে ওই অফিসের ভুমি কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে দেন। দালালদের মধ্যে আঃ খালেক আটাবাড়ী গ্রামের সব সময় ওই কার্যালয়ে অবস্থান করে থাকে। কোন কোন খাজনা খারিজে সামান্য ভুল ত্রুটি থাকলে ওই ভূমি কর্মকর্তা ৫০ হাজার টাকর উপরে গ্রহন করে থাকেন। তার চাহিদানুযায়ী নির্ধারিত ঘুষ প্রদান করে ভূমি খাজনা খারিজের আবেদন করে খাজনা খারিজ নিতে হচ্ছে। প্রতি মাসে ভূমি খারিজের নামে ওই কর্মকর্তা লাখ লাখ টাকা ঘুষ বাবদ হাতিয়ে নিচ্ছেন। সে যোগদানের পর হতে ওই কার্যালয় হতে যে পরিমান খাজনা খারিজ হয়েছে ওই সব ভূমি মালিকদের নিকট কথা বললে ঘুষ গ্রহনের প্রমান মিলবে। ভূমি মিউটেশন (খারিজ) বাবদ কেন ঘুষ নেওয়া হচ্ছে এ ব্যাপারে ইউনিয়ন উপ-সহকারি ভূমি কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামানের সাথে কথা বললে তিনি জানান, প্রতি খারিজের প্রস্তাব পাঠালে তার বিপরীতে সহকারি কমিশনার ভূমি কে ৪ হতে ৫ হাজার টাকা দিতে হয়। তাই বাধ্য হয়েই আমরা ঘুষ নিচ্ছি, এ কথা তিনি অকপটে স্বীকার করেন। তিনি আরো বলেন, এ টাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার রহমানের এল আর ফান্ডে জমা হয়। এল আর ফান্ড কি তা জানতে চাইলে তিনি জানান- এটা হলো ঃ সহকারী কমিশনারের ব্যক্তিগত ফান্ড। কালিহাতী উপজেলার সকল ভূমি কার্যালয়ের জমা খারিজের প্রস্তাব পাঠালে এল আর ফান্ডে টাকা দিতে হয়। তাছাড়া আমাদের ও কিছু খরচ আছে। তিনি আরো জানান, সহকারী কমিশনার ভূমি কালিহাতীর নির্দেশ মোতাবেক ঘুষ নিচ্ছি। তথ্যানুসন্ধানে আরো জানাযায়, শাহরিয়ার রহমান কালিহাতিতে যোগদানের পর তার গতিশীল কর্মতৎপরতায় কালিহাতির সকল ভুমি অফিসগুলো ঘুষ-দুর্নীতি মুক্ত হলেও আউলিয়াবাদ বাজরে অবস্থিত বীরবাসিন্দা ভুমি অফিসটি এখনো ঘুষ-দুর্নীতি মুক্ত হয় নাই। মোঃ কামরুজ্জামান ওই কার্যালয়ে দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতি করে লাখ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণ করছেন। তার ঘুষের টাকায় ঘাটাইলে পৌরসভার ভিতরে বিলাশস বহুল বাড়ী নির্মাণ করছেন।
তার ঘুষ গ্রহণের বিরুদ্ধে দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করলে ঘুষ গ্রহন সহ জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া যাবে। ইতি পূর্বে তার ঘুষ গ্রহণের বিরুদ্ধে ভূক্তভোগিরা সহকারি কমিশনার বরাবরে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ দিলেও রহস্যজনক কারনে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় সে ঘুষ গ্রহনে উৎসাহিত হয়ে ঘুষ গ্রহন করছেন। জমা খারিজ ছাড়াও তিনি খাজনা আদায়ে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। খাজনা কমিয়ে দিয়ে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে তিনি সরকারি ফান্ডে জমা না দিয়ে আত্মসৎ করছেন। অনেকের কাছ থেকে আবার অপকৌশল অবলম্বন করে খাজনার অতিরিক্ত টাকা আদায় করে নিজেই আত্মসাৎ করছেন। সম্প্রতি সময়ে তাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসাবে নাগবাড়ী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের দায়িত্ব দেয়ায় সেখানেও অবাদে ঘুষ গ্রহণ করে যাচ্ছে বলে জানাগেছে।
এ বিষয়ে ভূক্তভোগী জমি মালিকরা দুদক ও কালিহাতি উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার রহমানে সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করছে।