খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মাহমুদ হোসেনের পর উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি হলের প্রভোস্টরা পদত্যাগ করেছেন। এছাড়া আরও পদত্যাগ করেছেন সিন্ডিকেটের দুইজন সদস্য, শারীরিক শিক্ষা চর্চা বিভাগের পরিচালক, আইকিউএসির পরিচালক ও অতিরিক্ত পরিচালকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালকরা। বিদায়ী রেজিস্ট্রার এসব পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দুপুরে শিক্ষার্থীদের সামনে পদত্যাগের ঘোষণা দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মাহমুদ হোসেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের সচিব এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবর পাঠানো পদত্যাগপত্রে তিনি ‘ব্যক্তিগত কারণ’ উল্লেখ করেন। এদিন দুপুরে তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পদত্যাগের সিদ্ধান্তের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। এর আগে এক বদলির আদেশে জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক মো. মঈনুল হোসেন, উপাচার্যের সচিব সঞ্জয় সাহা, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক ড. মো. হাসানুজ্জামানসহ ১৩ কর্মকর্তাকে তাদের কর্মস্থল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য দপ্তরে বদলি করা হয়। পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার আগে খুবি উপাচার্য শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, সবকিছু মিলিয়ে আমার পক্ষে আর থাকা সম্ভব না। গতকাল থেকে সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় যে লেখালেখি শুরু হয়েছে তাতে আমার সম্মানহানি হচ্ছে। আমি সম্মানহানি আর নিতে পারছি না। সবকিছুর আগে আমার সম্মান। আমাকে শান্তিতে থাকতে দাও। আমি চাই না তোমরা আর কোনো ধরনের কিছু করো। তোমরা সবাই ক্লাসে ফিরে যাও। এদিকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ অনেকের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মচারীদের দাবি বা স্লোগান, অবরুদ্ধ রাখা, কার্যালয়ে তালা বন্ধ রাখার মতো ঘটনা ঘটলেও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ব্যতিক্রম। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও তার কাজের পরিচ্ছন্নতা, সততা ও শিক্ষা, গবেষণা ও উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয়কে অনেক এগিয়ে নিয়ে যাওয়াতে সবাই অত্যন্ত সন্তুষ্ট ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী ফারহানা ইয়াসমিন আশা উপাচার্যের পদত্যাগের খবরে বলেন, আমি মর্মাহত। কারণ, স্যার এই কোটা আন্দোলন অত্যন্ত সুন্দরভাবে সামলিয়েছেন। তিনি ক্যাম্পাসে পুলিশ প্রবেশ করতে দেননি। তিনি যা করেছেন তা আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে করতে পারেনি। তিনি সারা দেশে ভিসিদের মধ্যে উদাহরণ। তিনি খুবই ভালো শিক্ষক ও গবেষক। আমি তার পদত্যাগের বিষয়টি মেনেই নিতে পারছি না। উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২৫ মে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে যোগদান করেন প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। এছাড়া প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর উপ-উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেছিলেন। ট্রেজারার হিসেবে প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী যোগদান করেন ২০২২ সালের ১৬ আগস্ট।