ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপন্নার মধ্য দিয়ে পালিত হল এবার খুলনায় শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা অনুষ্ঠান। খুলনার হাজার হাজার ভক্তরা আনন্দের মাধ্যমে নাচে- গানে উক্ত উৎসবকে মুখরিত করে তোলে। উক্ত রথযাত্রা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার) পিপিএম-সেবা মহোদয়। সর্বপ্রথম কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার মহোদয় উপস্থিত আয়োজক কমিটির নেতৃবৃন্দ ও ভক্তদেরকে সাথে বিশেষ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময়ে তিনি তার প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বলেন, আমরা সবাই জানি যে এই ভূখন্ডে হাজার বছর ধরে সনাতন ধর্মলম্বীরা তাদের ধর্মীয় উৎসব পালন করে আসছেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান তিনটি উৎসবের মধ্যে অন্যতম হলো শারদীয় দুর্গাপূজা, শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন এবং শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের রথ যাত্রা। সনাতন ধর্ম অবলম্বনকারীদের ধর্মীয় রীতি মোতাবেক অশুভ সকল অপশক্তিকে পরাজিত করতে ও পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠানের জন্যই শ্রীশ্রী জগন্নাথদেবের এই রথ যাত্রা অনুষ্ঠান। কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার মহোদয় আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে দেশ ভাগ হলে পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী নানা অত্যাচার-নির্যাতন এবং বৈষম্যমূলক প্রহসন শুরু করে। পরবর্তীকালে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮ এর আইযুব খানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন, ১৯৬২ এর শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ এর ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান এবং ১৯৭০ এবং ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়। সনাতন ধর্মলম্বী মানুষেরা এদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বেশি রক্ত দিয়েছে। কারণ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রথম টার্গেট ছিল সনাতন ধর্মালম্বী মানুষের প্রতি। আপনারা সেই দেশেই এখন নির্বিঘ্নে বসবাস করছেন। এই দেশটি শুধুমাত্র আমাদের নয় আপনাদেরও সে কারণে আপনারা নিজেদের সংখ্যালঘু ভাববেন না। এই দেশের সংবিধানে বঙ্গবন্ধুর সকল ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণী পেশার মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করে গিয়েছেন। আপনারা এখানে সম্মান ও অধিকার নিয়ে বসবাস করবেন। আপনাদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের নির্যাতন হলে আমরা পুলিশ বাহিনী অবশ্যই আপনাদেরকে নিরাপদ দিতে বদ্ধপরিকর। উক্ত অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি শ্রী শ্যামল হালদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এএন্ডও) সরদার রকিবুল ইসলাম, বিপিএম-সেবা, খুলনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(প্রশাসন ও অর্থ ) তানভীর আহম্মেদ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ খুলনা জেলা শাখার সভাপতি শ্রী কৃষ্ণপদ দাশ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ খুলনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শ্রী বিমান সাহাসহ বিভিন্ন আয়োজক কমিটির কর্মকর্তাবৃন্দ এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন।