নরসিংদী পৌর সভার সাবেক মেয়র আমজাদ হোসেন বাচ্চু। তিনি শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সম্পতি জেলা পরিষদের সদস্য পদে নির্বাচন করে হেরে যাওয়া ব্যক্তিটি ভাগ্যক্রমে নরসিংদী পৌর মেয়র হয়ে ৪ বছরে শূন্য থেকে হাজারো কোটি টাকার মালিক বনে যান। পৌর সভার তেমন কোন উন্নয়ন না করে রাস্তা সংস্কারের নামে হাতিয়ে নেয় হাজার হাজার কোটি টাকা। আর বর্তমানে নরসিংদী পৌর এলাকায় প্রতিটি রাস্তা ভাঙ্গা যান বাহন তো দূরের কথা জনসাধারনও ভাল ভাবে চলা ফেরা করতে পারছেন না। প্রতিটি রাস্তা ভাঙ্গা আর বেহাল দশা। আর পৌর এলাকায় জনসাধারনের কাজ না করে নাগরিয়া কান্দি এলাকায় ৫ তলা নিজস্ব বাড়ীসহ রয়েছে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ। এলাকাবাসী জানায় ২৫/৩০ বছর পূর্বে নরসিংদী শহরে মিতালী সিনেমা হলে টিকেট বিক্রিসহ মাইকে প্রচার করতেন তিনি। হটাৎ ই ঘুরে যায় ভাগ্যের চাকা। হয়ে যান শহর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক,আর নরসিংদীর সাবেক পৌর মেয়র লোকমান হোসেন সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হওয়ার পর তারই ছোট ভাই কামরুজ্জামান কামরুল মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন প্রায় ১০ বছর। পরবর্তীতে গত পৌর নির্বাচনে কামরুজ্জামান কামরুলকে আওয়ামীলীগ থেকে নমিনেশন না দিয়ে আশরাফুল সরকারকে দলীয় নমিনেশন দেয় আওয়ামীলীগ সরকার। নমিনেশন দেওয়ার পর জানতে পারে সাবেক পৌর মেয়র লোকমান হোসেন হত্যা মামলার আসামী আশরাফুল সরকার। পরবর্তীতে আবারো দলীয় নমিনেশন পরিবর্তন করে শহর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আমজাদ হোসেন বাচ্চুকে আওয়ামীলীগ থেকে নমিনেশন দেন কেন্দ্রীয় কমিটি। শুরু হয় নির্বাচন আওয়ামীলীগ থেকে আমজাদ হোসেন বাচ্চু আর সতন্ত্র থেকে এস এম কাইয়ুম নির্বাচন করায় জমে উঠে পৌর নির্বাচন। আর আমজাদ হোসেন বাচ্চুকে টাকা ও লোকবল দিয়ে সহযোগীতা করেন সাবেক পৌরমেয়র কামরুজ্জামান কামরুল। আর টাকা এবং জনবল শক্তি না থাকলেও হয়েযান পৌর মেয়র, আর দুহাতে কামাতে থাকেন টাকা। মাত্র ৪ বছরে পৌর মেয়র হয়ে নাগরিয়া কান্দিতে করেছেন ৫ তলা বাড়ী। ঢাকাতে ফ্ল্যাট ফটসহ বিদেশে রয়েছে বাড়ী জানান এলাকাবাসী। আর পৌর সভায় নিজস্ব লোকসহ আপন ভাইকে দিয়েছেন চাকরী। আর পৌরবাসীদেরকে জিম্মীকরে পূর্বের রাজা বাদশাদের মতো আদায় করেন দুই তিন গুন বেশী কর আদায়ের অভিযোগ ভুক্তভোগিদের। এর পর থেকেই ঘুরেযায় সাবেক মেয়র আমজাদ হোসেনের ভাগ্যের চাকা, হয়েযায় রাতারাতি হাজার কোটি টাকার মালিক। রয়েছে তার নিজস্ব বাহিনী। মেয়রের নামসহ বিভিন্ন লাইসেন্সে এলজিইডি,সড়কজনপথ থেকে বড় বড় কাজ করতেন তিনি। প্রত্যেকটি কাজের মান নিম্নমানের। অত্যাধুনিক ডিজাইনের নাগরিয়া কান্দী এলাকায় ৫ তলা একটি বিল্ডিং নির্মাণ করেন। নাম দেয়া হয় মেয়র ভিলা। এর পূর্বে এলাকায় বিলাসবহুল একটি বাগানবাড়ী ও রয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। স্থানীয়রা বলেন, আমজাদ হোসেন বাচ্চুর বাড়ী ছাড়াও রয়েছে বহু একর সম্পত্তি। গত ৪ বছর আগে যার কিছুই ছিল না এখন মেয়র হওয়ার পর থেকে হাজার কোটি টাকার মালিক। স্বৈরাচার সরকার পতনের পর গাঢাকা দেওয়ায় আলোচনায় আসেন তিনি। পৌর মেয়রের ক্ষমতা পেয়ে রাতারাতি চলাফেরায় আসে পরিবর্তন । একাধিক মডেলের গাড়ি দিয়ে চলাফেরা করেন তিনি। বৈষম্য ছাত্র আন্দোলনের কয়েক মাস পূর্বে সাবেক মেয়র ঢাকাতে প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যায়ে একটি বিশাল সম্পত্তি ক্রয় করে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। এছাড়াও এলাকায় রয়েছে তার নিজস্ব বাহিনী। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে সন্ত্রাসীদের দিয়ে ধরে এনে নির্যাতন চালাতেন তিনি।এলাকার অনেকেই বলেন, আমজাদ হোসেন বাচ্চু মেয়র হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পেতো না। কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বললে তার সন্ত্রাসী বাহিনীদের দিয়ে তাকে এলাকা ছাড়া করতো। গত ৫ই আগস্ট ছাত্র- জনতার আন্দোলনের কারণে আওয়ামী লীগ সরকার পদত্যাগ করলে পালিয়ে যান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে চেলাফেলারাও তার সঙ্গে পালিয়ে যায়।পলাতক ও মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় সাবেক মেয়র আমজাদ হোসেন বাচ্চুর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।