গাজীপুরের টঙ্গীতে ছিনতাইকারী সন্দেহে উশৃঙ্খল জনতার গণপিটুনিতে একজন নিহত ও একজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পাঁচ জন আটক হয়েছেন। গত বুধবার রাতে টঙ্গীতে এই ঘটনা ঘটে। নিহত যুবক সাব্বির হোসেন (১৮) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার আলিয়াবাদ গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে। সে পরিবারের সাথে দত্তপাড়া লেদুমোল্লাহ রোডে মিজান মিয়ার বাড়ির ভাড়া বাসায় থেকে অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত। একই ঘটনায় গুরুতর আহত মেজবাহ উদ্দিন (৩৫) টঙ্গীর এরশাদনগর এলাকার মিজান শেখের ছেলে। আটক চার জনের নাম জানায়নি পুলিশ। তবে আটককৃতদের মধ্যে স্থানীয় বিএনপি নেতার এক ছেলে রয়েছে বলে জানা গেছে। টঙ্গী পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কায়সার আহমদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। নিহতের স্বজনরা ও পুলিশ জানায়, সাব্বির প্রতিদিন বিকেলে অটোরিকশা নিয়ে বের হয়ে উপার্জন শেষে রাত ১১টার মধ্যে ঘরে ফিরে যেত। প্রতিদিনের ন্যায় বুধবারও বিকেল চারটার দিকে বাসা থেকে অটোরিকশা নিয়ে বের হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে দত্তপাড়া দিঘীরপাড় থেকে তিনজন যাত্রী নিয়ে অটোরিকশাযোগে টঙ্গী পূর্ব থানার দিকে যাচ্ছিলেন সাব্বির। পথিমধ্যে হকের মোড় কোকলা গেইটের সামনে পৌঁছা মাত্র আটক চার জনসহ অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জন উশৃঙ্খল জনতা ছিনতাইকারী সন্দেহে অটোরিকশার যাত্রী ও চালকের পথরোধ করে গণপিটুনি দিতে থাকে। এ সময় কৌশলে দুই যাত্রী পালিয়ে গেলেও ফেঁসে যান অটোচালক সাব্বির ও এক যাত্রী মেজবাহ। দুজনকে বেধে বেধড়ক পিটুনি দেয় উশৃঙ্খল জনতা। এতে তারা গুরুতর আহত হয়ে পড়লে রাত সাড়ে ১১টার দিকে টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে এনে কৌশলে পালিয়ে যায় জনতা। পরে খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে আহতদের বাধন খুলে দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এর কিছুক্ষণ পর সাব্বির মাটিতে লুটিয়ে পড়লে পুনরায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। নিহতের স্বজনরা কয়েকজনকে আটক করে থানা পুলিশে সোপর্দ করে। ওসি কায়সার আহমদ বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধারপূর্বক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয় এবং পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা চলমান।