গত কিছুদিন ধরেই বেহাল হয়ে পড়েছে নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রধান সড়কগুলো। বিশেষ করে কয়েকটি সড়কে যান চলাচল যেন একেবারেই অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। সড়কজুড়েই রয়েছে অসংখ্য খানাখন্দ। আর বৃষ্টির দিনে তো বলারই অপেক্ষা রাখে না। একেকটা সড়ক পরিণত হয় মৃত্যুফাঁদে।

সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই সংস্কার না হওয়ায় বেহাল হয়ে পড়েছে নারায়ণগঞ্জের আদমজী-চাষাঢ়া সড়ক। ১২ কিলোমিটারের এই সড়কের বেশিরভাগ স্থানেই ইট-খোয়া উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

বেহাল দশার কারণে দুর্ঘটনার শঙ্কা নিয়েই যাত্রীদের এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। অনেক সময় রিকশা থেকে পড়ে গিয়ে আহত হচ্ছেন অনেকে। যানবাহনগুলো ছোট-বড় গর্ত এড়িয়ে চলছে এঁকেবেঁকে।

বিশেষ করে সড়কটির সিদ্ধিরগঞ্জ পুল, আদমজী ইপিজেড, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা, আইটি স্কুল মোড়, হাজীগঞ্জ, খানপুর, চাষাঢ়া এলাকার অবস্থা খুবই ভয়াবহ। আর হাজীগঞ্জ দুর্গের সামনে সৃষ্ট গর্ত এতো বড় আকার ধারণ করেছে দূর থেকে দেখলে ছোট পুকুর মনে হবে।
যার কারণে সড়কের এই অংশটি পার হতে ছোট ছোট যানবাহন থেকে শুরু করে বড় যানবাহনগুলোকে অনেক সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। এতে যানবাহনের ধীরগতির কারণে সৃষ্টি হয় থাক যানজট।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা যাতায়াতের জন্য এক সময় প্রধান সড়ক হিসেবে ব্যবহার হতো ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ (পাগলা) পুরাতন সড়ক। নারায়ণগঞ্জের পাশাপাশি মুন্সিগঞ্জের বাসিন্দাদেরও ঢাকা যাতায়াতের জন্য অন্যতম মাধ্যম ছিল এই সড়কটি। পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালের দিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের নির্মাণ কাজ শেষ হলে দ্রুত যাতায়াতে রুটটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এরপর দীর্ঘ কয়েক যুগেও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কটিতে সংস্কারের ছোঁয়া লাগেনি।

সম্প্রতি দেখা যায়, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কের পঞ্চবটি থেকে চাষাঢ়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে পিচ, পাথর ও খোয়া উঠে গেছে। সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙা সড়ক দিয়ে যানবাহন ধীরগতিতে চালাতে হচ্ছে। সড়কের দুপাশের শোল্ডারিং ভেঙে গেছে।
কাদামাটি গর্তের তৈরি হয়েছে। সেই কাদামাটির গর্তে প্রায়ই যানবাহনের চাকা আটকা পড়ে।

অন্যদিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের প্রবেশ পথে রয়েছে বিশাল গর্ত। যে গর্তগুলো বৃষ্টি আসলে পানি আটকে পুকুরে পরিণত হয়। পুরো সড়ক ভালো থাকলে এই প্রবেশপথে ভাঙ্গা থাকার কারণে চরম দূর্ভগের শিকার হতে হয়। বৃষ্টির দিনে যাতায়াতের কোনো উপায় থাকে না।
একই সাথে শহরের নিতাইগঞ্জ এলাকার রাস্তাতেও বেহাল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বেশিরভাগ স্থানেই ইট-খোয়া উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যে রাস্তা দিয়ে একজন সুষ্ঠু স্বাভাবিক মানুষ চলাচল করলে অসুস্থ হয়ে যাবে। পাশাপাশি শহরের অন্যান্য সড়কগুলোতেও একই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাজেট হয়ে গেলেই রাস্তাগুলো কাজ শুরু হবে। যে সকল রাস্তা সংস্কার করার দরকার আমরা করে দিবো।’

নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সহজ) নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস বলেন, ‘আমাদের অধীনে থাকা রাস্তাগুলো খুব শিগগিরই সংস্কার করা হবে। আমাদের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধু বাজেটের অপেক্ষায় রয়েছি। আপাতত বিভিন্ন সড়কে সৃষ্ট বড় বড় খানাখন্দ সাময়িক সময়ের জন্য সংস্কার করে দিচ্ছি।’