কক্সবাজারে মেরিন ড্রাইভ সড়কের উখিয়ার পাটুয়ারটেক এলাকায় ৭ লাখ ইয়াবা জব্দসহ ইয়াবা সম্রাট আবদুল্লাহ ও তার সঙ্গে চার মাদক কারবারিকে আটক করেছে র্যাব। এসময় তাদের ব্যবহৃত প্রাইভেট কারটিও জব্দ করা হয়। র্যাব জানিয়েছে, আটকরা সবাই পরস্পর নিকটাত্মীয় এবং সংঘবদ্ধ মাদক কারবারি চক্রের সদস্য। গত সোমবার (২০ মে) দুপুরে র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ব্যাটালিয়নটির সহ-অধিনায়ক মেজর শরীফুল আহসান। আটকরা হলেন, টেকনাফ পৌরসভার ডেইল পাড়ার হাজী মোহাম্মদ আলীর ছেলে আব্দুল আমিন (৪০) ও একই এলাকার মৃত দীল মোহাম্মদের ছেলে জাফর আলম (২৬) এবং টেকনাফ সদর ইউনিয়নের গোদারবিল এলাকার আবু ছৈয়দের ছেলে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ (৩৫) ও একই এলাকার মৃত মোহাম্মদ কাশেমের ছেলে নুরুল আবছার (২৮)। এ বিষয়ে র্যাব জানিয়েছে, আটকদের মধ্যে আব্দুল আমিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভূক্ত মাদক কারবারি। তিনি গত ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে প্রথম দফায় আত্মসমর্পণ করেছিলেন। পরে সাজাভোগ শেষে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। তিনি ইয়াবার বড় একটি চক্র নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলেন। তার বিরুদ্ধে টেকনাফসহ দেশের বিভিন্ন থানায় ১১টি মামলা রয়েছে। র্যাব আরো জানায়, মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ একজন চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী। তিনি আব্দুল আমিনের ভাগিনা। তার বিরুদ্ধে ২টি মাদক মামলা রয়েছে। আটক নুরুল আবছার অপর আসামী মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর ভগ্নিপতি। তার বিরুদ্ধেও মাদক আইনে একটি মামলা রয়েছে। এছাড়া আটক জাফর আলম সংঘবদ্ধ মাদক কারবারি চক্রের সক্রিয় সদস্য এবং বড় মাদকের চালান পাচারে তথ্য সরবরাহের দায়িত্ব পালন করতেন। সংবাদ সম্মেলনে শরীফুল আহসান বলেন, সোমবার মধ্যরাতে আব্দুল আমিনের নেতৃত্বে তার সিন্ডিকেটের সদস্যরা প্রাইভেট কার যোগে মাদকের বড় একটি চালান টেকনাফ থেকে পাচারের উদ্দেশ্যে কক্সবাজার শহরের দিকে যাচ্ছিলো। পরে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের একটি দল মেরিন ড্রাইভ সড়কের উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের পাটুয়ারটেক এলাকায় অস্থায়ী তল্লাশি চৌকি স্থাপন করে। এক পর্যায়ে রাত সোয়া ২টার দিকে টেকনাফ থেকে সড়ক ও জনপদ বিভাগের স্টিকার লাগানো বিলাশ বহুল একটি প্রাইভেট কার সেখানে পৌঁছালে থামার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু গাড়ীতে থাকা লোকজন না থেমে দ্রুত চালিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে র্যাব তাদের আটক করে। পরে গাড়ীতে থাকা লোকজনের আচরণ ও গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তাদের জিজ্ঞাসাবাদে মাদকের চালান থাকার তথ্য স্বীকার করে দলটি। এসময় গাড়ীর পেছনের সিটের নিচে বিশেষ কায়দায় রাখা দুইটি বড় বস্তার ভিতরে পাওয়া যায় ৭ লাখ ইয়াবা। জব্দ করা হয় ইয়াবা পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত গাড়ীটিও। এসব ইয়াবার আনুমানিক মূল্য ৩ কোটি টাকারও বেশী। “ র্যাব এ কর্মকর্তা বলেন, “ আটকরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকারোক্তি দিয়েছে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে অবস্থানকারী জনৈক সিরাজের মাধ্যমে আব্দুল আমিনের নেতৃত্বের সিন্ডিকেটের সদস্যরা বড় বড় মাদকের চালান নিয়ে আসতো। সীমান্তে সাগর ও নদী পথে মাদকের এসব চালান টেকনাফে এনে নিজেদের হেফাজতে মজুদ রাখতো। পরে কক্সবাজার শহরে আনার পর সিন্ডিকেটের সদস্যদের মাধ্যমে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাচার করা হয়। “ আটকদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে উখিয়া থানায় মামলা করা হয়েছে বলে জানান মেজর শরীফুল ইসলাম।