পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং সন্ত্রাস দমনে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছে রেপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
বান্দরবান শহরের মেঘলা এলাকায় পার্বত্য জেলা পরিষদ সন্মেলন কক্ষে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আজ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির কার্যক্রমের জন্য মূলত তাদের সময় দেয়া। যারা সন্ত্রাসী কার্যক্রম করেছে তাদের ছাড় দেয়া হবে না। আমরা সিসিটিভির ফুটেজ স্থানীয়দের দেখিয়ে সন্ত্রাসীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করবো। চাঁদের গাড়িতে করে যারা হামলা চালিয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।”
কমান্ডার মঈন বলেন, “সাঁড়াশি অভিযান চলবে। সেনাবাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে আমরা অভিযান পরিচালনা করবো। অস্ত্র উদ্ধার এবং সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনার জন্য সেনাবাহিনীকে সাথে নিয়ে আমরা আমাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করবো।”
তিনি বলেন, জামাতুল আল ফিন্দাল শ^ারকীয়ার সাথে তাদের তিন বছরের প্রশিক্ষণ চুক্তি ছিল। ২০২৩ সালের শেঘ দিকে সমন্বিতভাবে দেশের বিভিন্ন জায়গায় নাশকতার পরিকল্পনা ছিল। তথ্য পাওয়ার পর অভিযান পরিচালনাড তারা সফল হয়নি। সন্ত্রাসীরা থেমে থাকবে না, তাদের এ ধরনের আরও পরিকল্পনা থাকতে পারে।
র্যায পরিচালক বলেন, “তারা বাংলাদেশের নাগরিক। তাদের আমরা সম্মান করি। এ কারণে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে শান্তি আলোচনা (পিচ টক) চালু ছিল। এর মধ্যেই তারা এ ধরনের কার্যকলাপ করছে। তারা আরো নাশকতার চেষ্ট করতে পারে।”
ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধার বিষয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে তারা মুক্তিপণ চেয়েছে এমন কথা কয়েকদিন যাবত চাওড় হয়েছে। তবে র্যাব কিছু কৌশল অবলম্বন করেছে। এখানে কোন অর্থ লেনদেন হয়নি। সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে গত দুইদিন অভিযান চপলছে। তথ্যপ্রযুক্তির বিভিন্ন সহায়তা নেয়া হয়েছে। কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে। বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে তাকে উদ্ধার করেছি এবং জীবিত পেয়েছি। অভিযান চলমান রয়েছে।
কমান্ডার মঈন বলেন, ব্যাংকের ভল্টে বিপুল টাকা আছে, এমন মনে করে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে। ব্যাংকে দায়িত্বরত পুলিশের অস্ত্র লুট করে। এ সময় শতাধিক কুকি চীন সদস্য হামলা চালায়। নেজাম উদ্দিনকে তারা সনাক্ত করেছে, তবে তার বিচক্ষণতার কারণে ব্যাংকের টাকা নিতে পারেনি। এক কোটি টাকা দেয়ার জন্য তারা ব্যাংক ম্যানেজারকে হুমকি দিয়েছিল। তবে ব্যাংকের ভল্টের চাবি দেননি বলে তাকে তারা অপহরণ করে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে র্যাব পরিচালক বলেন, “কেএনএফ শুধু ব্যাংকে হামলা চালিয়েছে তা নয়। তারা বেশকিছু হামলা চালিয়েছে। সেনাবাহিনী, বিজিবি সবাইকে নিয়ে অভিযানের পরিকল্পনা করছি। কেএনএফ সদস্যরা রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমে জড়িত, র্যাবই প্রথম তা উন্মোচন করে। জঙ্গিদের অর্থের বিনিময়ে অস্ত্র সরবরাহ. আশ্রয় ও প্রশিক্ষণ দেয়া, পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি বিনষ্ট করাসহ বিভিন্ন অপতৎপরতায় লিপ্ত ছিল। সেনাবাহিনী ও র্যাব সর্বশক্তি নিয়োগ করে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণ নিয়ে বেড়ে উঠা জামাতুল আল ফিন্দাল শ^ারকীয়ার সব সদস্যকে আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে।”
তিনি বলেন, তাদের প্রশিক্ষণদাতাদেরও আইনের আওতায় আনা হয়েছে। আমাদের অব্যহত অভিযানে তারা অনেকটা কোনঠাসা হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে পুনরায় আগের মতই শান্তি শৃঙ্খলা বিরাজ করছিল। এখানে ‘শান্তি প্রতিষ্ঠা’ কমিটি কাজ করছিল আর তখনই তারা পুনরায় রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জনগণের কাছে নিজেদের উন্মোচিত করেছে।