জনশক্তি কর্মস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর সাঁট-মুদ্রাক্ষরিক কাম-কম্পিউটার অপারেটর মো. আব্দুল হান্নান এর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনেক অভিযোগ পাওয়া গেছে। আব্দুল হান্নান একজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হয়েও নিজেকে পরিচয় দিতেন অফিসের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে। তিনি বিভিন্ন ম্যানপাওয়ার এজেন্সির লাইসেন্স করিয়ে দিবে ও শ্রমিক ভিসায় বিদেশে লোক পাঠিয়ে দিবে এই মিথ্যা আশ^াস দিয়ে অনেক গরীব দুঃখী মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
সূত্র জানায়, আব্দুল হান্নান দীর্ঘদিন যাবত বিএমইটির নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে জড়িত ছিলেন। এমনকি নিজের ছেলেকেও মোট অংকের ঘুষের বিনিময়ে জুনিয়র ইনস্ট্রাকটর চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন বিএমইটি মেহেরপুর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। তার বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে নানা অভিযোগ পাওয়ায় বিএমইটি কাকরাইল মূল অফিস থেকে বগুড়া জনশক্তি কর্মস্থান ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ট্রান্সফার করা হয়। ভুক্তভোগী কয়েকজন জানান তার কাছে টাকা চাইতে গেলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এছাড়াও তার বাসায় টাকা চাইতে গেলে মেরে ফেলার হুমকি দেন বলে কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান। এ ব্যাপারে তার নামে কয়েকটি মামলা রয়েছে।
এছাড়াও বিএমইটির হেড অফিস ও বগুড়া অফিসে তার নামে কয়েকবার অভিযোগ করা হয়েছে। অফিস মারফত জানা যায়, যে দুর্নীতির দায়ে হেড অফিস থেকে লোকাল অফিস বগুড়াতে তাকে বদলী করা হয়েছে। তার নামে বারবার অভিযোগ করা সত্ত্বেও আব্দুল হান্নান এতটাই প্রভাবশালী যে তার অফিস হতে তার বিরুদ্ধে কোনরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, আব্দুল হান্নান তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী হলেও সে, বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক। বিএমইটির তৃতীয় শ্রেণীর পদে চাকরি করে তার মিরপুরে টেকনিক্যাল মোড়ে ওয়াসার অফিসের পিছনে (৩০/৪/এ দারুল সালাম রোড, বাংলাকুঞ্জ অ্যাপাটমেন্ট এর পাশে) তার রয়েছে দুইটি বিলাস বহুল নির্মাণাধীন ফ্ল্যাট। যার বাজার মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা। এমনকি সাভারের ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ এশিয়ার পিছনে তার রয়েছে ১৪ কাটার একটি বিশাল প্লট। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা। এছাড়াও নিজ গ্রামের বাড়ি পাবনার ডাপুনিয়াতে কোটি টাকা ব্যয়ে করেছেন বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স বাড়ি। এছাড়াও তার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা ও মেয়ে ফারজানা হান্নান হীরার নামে রয়েছে প্রায় ৫০ বিঘার মত জমি।
একজন ভুক্তভোগী থেকে অভিযোগে জানা গেছে, আব্দুল হান্নান সৌদি আরবের লোক পাঠানোর কথা বলে তার নিকট হতে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ মাস হয়ে গেল ভুক্তভোগী তার টাকা উদ্ধার করতে পারেননি। এমনকি তার পাসপোর্ট আটকিয়ে রেখে পুনরায় টাকা দাবি করা হয়। সর্বশেষ তার নিকট টাকা চাইতে গেলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় এবং নিজ মেয়েকে দিয়ে মেয়েকে নারী নির্যাতন মামলার ভয়-ভীতি দেখায়। এ ব্যাপারে থানায় মামলা করা হয়েছে। আরেকজন ভুক্তভোগী জানান, সম্পর্কে আত্মীয় হওয়ার দরুন কারণ তার নিকট মালয়েশিয়ায় শ্রমিক ভিসার জন্য তিন লাখ টাকা প্রদান করে। কিন্তু অদ্যবধি তিনি কোন টাকাই ফেরত পাননি। শ্রমিক ভিসা পাইয়া দিবে এবং বিদেশে লোক পাঠানোর কথা বলে তিনি বিএমইটির নাম ব্যবহার করে নানাভাবে মানুষজনদেরকে প্রতারিত করে আসছে। আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে অধ্যবধি কোন বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।