রাজধানীর বাড্ডা এলাকা থেকে ৪টি পিস্তল ও অস্ত্র তৈরীর সরঞ্জামাদিসহ ৬ জন অস্ত্র বিক্রেতাকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গত সোমবার রাতে রাজধানীর বাড্ডা থানার উত্তর বাড্ডা ও হাজী আব্দুল হামিদ রোডস্থ পূর্ব-পদরদিয়া এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো- অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ী চক্রের মূলহোতা মো. মোখলেছুর রহমান সাগর (৪২), তার প্রধান সহযোগী মো. তানভির আহম্মেদ (৩২), অনিক হাসান (২৮), মো. আবু ইউসুফ সৈকত (২৮), রাজু হোসেন (৩৮) ও মো. আমির হোসেন (৪০)। তাদের বাড়ি পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ থানার দক্ষিন কৌড়ি খাড়া গ্রামে। তাদের কাছ থেকে ৪টি পিস্তল, ৪ রাউন্ড কার্তুজ, ৭টি পিস্তলের কাঠের ফর্মা, ১০টি ফায়ারিং ম্যাকানিজম, ৪টি ট্রিগার, ২টি পিস্তলের হ্যান্ডগ্রিপ, ২টি ড্রিল বিট, ৫টি রেত, ৫০টি স্প্রিং, ৪০টি পিস্তলের নাট বল্টু, ২টি কম্পাস, ৩টি গাজ, ৪টি ক্লাম, ২টি ড্রিল মেশিন, ২টি বাইস, ১টি বার্ণি স্কেল, ১টি মুগুর, ৪টি ক্লাম, ২০টি হেস্কো ফ্রেম, ২টি গোল্ড এলএস ফ্লাম, ১টি টুল বক্স, ১টি গ্যারেন্ডার মেশিন, ১টি কাঠের যোগান, ১টি হাতুরি ও ৪টি শিরিস কাগজ উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারস্থ র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১০ এর কমান্ডিং অফিসার (অধিনায়ক) এ্যাডিশনাল ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন এসব তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১০ এর সহকারী পুলিশ সুপার ও সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এম. জে. সোহেলসহ র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কমান্ডিং অফিসার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন জানান, সোমবার রাত আনুমানিক ১১টার দিকে র্যাব-১০ এর একটি দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর বাড্ডা থানার উত্তর বাড্ডা এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানে প্রথমে মো. মোখলেছুর রহমান সাগর (৪২) ও তার প্রধান সহযোগী তানভিরকে আটক করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের দেওয়া তথ্যমতে র্যাব-১০ এর সদস্যরা সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে রাজধানী বাড্ডা থানার হাজী আব্দুল হামিদ রোডস্থ পূর্ব-পদরদিয়া এলাকা থেকে অপর ৪ জন জনকে গ্রেফতার করে। র্যাব বলছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত মো. মোখলেছুর রহমান সাগর অবৈধ অস্ত্র তৈরি ও অস্ত্র ব্যবসায়ী চক্রটির মূলহোতা। সে পেশায় একজন ভাস্কর্য/মূর্তি তৈরির কারিগর। মোখলেছুর রহমান সাগর ভারতের কলকাতায় এবং আসামের শিলিগুঁড়িতে প্রায় ১২ বছর যাবৎ ভাস্কর্য/মূর্তি তৈরির কারিগর হিসেবে কাজ করে আসছিল। সেখানে সুকুমার নামের একজন অস্ত্র তৈরির কারিগরের সাথে তার পরিচয় হয় এবং তার কাছ থেকে মোখলেছুর রহমান সাগর অস্ত্র তৈরির দক্ষতা অর্জন করে। পরে মোখলেছুর রহমান সাগর দেশে এসে অস্ত্র তৈরি শুরু করে। তারা প্রতিটি পিস্তল/অস্ত্র তিন লাখ টাকায় বিক্রি করতো। স্বল্প সময়ে অধিক অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে এই ব্যবসার সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছিল বলে তারা র্যাবের কাছে স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।