নাটোর-৪ (গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুসকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় শেষবারের মতো বিদায় জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) বাদ জোহর গুরুদাসপুর উপজেলার বিলসা ঈদগাহ মাঠে চতুর্থ জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এর আগে বুধবার (৩০ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর ন্যাম ভবন মসজিদে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে সন্ধ্যায় গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় এলাকার নিজ বাড়িতে সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুসের মরদেহ আনা হয়। বর্ষীয়ান এই আওয়ামী লীগ নেতাকে দেখতে রাতেই হাজার হাজার নেতাকর্মী ভিড় করেন সেখানে। এ সময় তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বড়াইগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় ও দুপুর ১২টায় গুরুদাসপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার পূর্বে প্রয়াত আব্দুল কুদ্দুসের কফিনে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতৃবৃন্দ, জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ সময় তাকে গার্ড অফ অনার প্রদান করা হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, আই সি টি প্রতিমন্ত্রী ও নাটোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য জুনায়েদ আহমেদ পলক, নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল, নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান, সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুসের মেয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি ও ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আসিফ আবদুল্লাহ বিন কুদ্দুস শোভনসহ হাজারো নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এরপর সেখান থেকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় আব্দুল কুদ্দুসের গ্রামের বাড়ি গুরুদাসপুরের বিলসা গ্রামে। সেখানে আরেক দফা জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। প্রসঙ্গত, গত বুধবার সকাল ৭টা ২২ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুস। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে, এক ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুসের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক প্রকাশ করেছেন। আব্দুল কুদ্দুস পঞ্চম, সপ্তম, নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সপ্তম সংসদে তিনি মৎস্য ও পশু সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি রাজশাহী কলেজের নির্বাচিত ভিপি ছিলেন এবং বৃহত্তর রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকত্তোর ডিগ্রি অর্জনকারী আব্দুল কুদ্দুস মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে ট্রেনিং নিয়ে মুজিব বাহিনীর আঞ্চলিক কমান্ডার ও সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন।