কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাখরনগরে মায়ের দেয়া পাঁচশত টাকা পুজিঁতে নার্সারী ব্যবসা শুরু করা কাউছার পারুল দম্পতির বাগানে এখন রয়েছে প্রায় কোটি টাকার চারাগাছ। এই দম্পতির সবুজ নার্সারির উৎপাদিত চারা বিভিন্ন জেলা ছাড়িয়ে পৌছে গেছে রাজধানী ঢাকায়। নার্সারীতে উপজেলার সফল উদ্যোক্তা এই কাউছার পারুল দম্পতি। উদ্যোক্তা কাউছার উপজেলার নবীপুর পূর্ব ইউনিয়নের বাখরনগর গ্রামের মৃত বারেক মিয়ার ছেলে। কাউছারের স্ত্রী উদ্যোক্তা পারুল আক্তার একই গ্রামের মো: ইউনুছ মিয়ার কন্যা। পারুল আক্তার ২০১৯ সালে নার্সারীতে সেরা নারী উদ্যোক্তা হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন। জানা যায়, কাউছার মিয়া বাখরনগরের একটি নার্সারীতে ৩০০টাকা মাসিক বেতনে কাজ করতেন। এভাবে কয়েকবছর কাজ করার পর ২০০০সালে মা আমেনা খাতুন তার হাতে পাঁচশত টাকা তুলে দিয়ে নিজে চারা উৎপাদন করে বিক্রি করতে বলেন। মায়ের দেয়া সেই পাঁচশত টাকা পুঁজি দিয়ে প্রথমে বাড়ীতে চারা উৎপাদন করে ব্যবসা শুরু করা এই কাউছার পারুল দম্পতি। কিছুদিন পর বাড়ীর পাশে একটু জায়গা লিজ নিয়ে কাজ শুরু করা সবুজ নার্সারীর এখন পাঁচটি শাখায় রয়েছে কোটি টাকার চারাগাছ। কাউছার মিয়া বলেন, আমার নার্সারাতে এখর কয়েক হাজার জাতের দেশি-বিদেশী ফলদ বনজ ও ঔষধি গাছের চারা রয়েছে, এর মধ্যে অন্যতম হলো জাপানের মিয়াজাকি আম, ব্রুনাই কিং, রেড আইভরি, রাম্বুটান, অ্যাভোকাডো, মিশরের ত্বীন, জাপানের জাতীয় ফল পার্সিমন, মালয়েশিয়ার জাতীয় ফল ডুরিয়ান,মালয়েশিয়ান নারকেল, ক্যান্সার প্রতিরোধী করসল গাছসহ সকল প্রকার চারাগাছ আমার হাতে রয়েছে। কুমিল্লায় কোন গাছ না পাওয়া গেলেও আমার নার্সারীতে কালেকশন আছে। আমার সবুজ নার্সারীর চারা রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে যায়। উদ্যোক্তা পারুল আক্তার বলেন, আমরা ক্ষুদ্র থেকে শুরু করেছিলাম। অনেক পরিশ্রম করে আজকের এই অবস্থানে দাড়িয়েছি। আমাদের এই সফলতার স্বীকৃতি স্বরুপ ২০১৯ সালে নার্সারীতে সেরা নারী উদ্যোক্তা হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে জাতীয় পুরস্কার প্রদান করেন। আমি বলতে চাই যারা বেকার রয়েছে তারা যদি স্বল্প পুজিতে নার্সারী ব্যবসা শুরু করে তাহলে সফল হওয়া সম্ভব। এ ব্যাপারে মুরাদনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ পাভেল খান পাপ্পু বলেন, নার্সারীতে সফল কাউসার পারুল দম্পতি কুমিল্লা তথা বাংলাদেশের গর্ব। ক্ষুদ্র থেকেও যে অনেক বড় হওয়া যায় কাউসার পারুল দম্পতি এটার বাস্তব উদাহারন। এভাবে যদি সকলে উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা করে তাহেল বেকারত্বের হার অনেকটাই কমে আসবে এবং নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।