তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ সম্প্রতি ড. ইউনূসের পক্ষে ৩৪ জন বুদ্ধিজীবীর বিবৃতি নিয়ে বলেছেন, ‘বুদ্ধি লোপ নাকি বুদ্ধি খাটিয়ে শ্রমিকদের ঠকানোর জন্য তারা বিবৃতিটা দিয়েছেন -সেটিই প্রশ্ন।’
সোমবার বিকেলে রাজধানীর পান্থপথে সামারাই কনভেনশন সেন্টারে টেলিভিশন ক্যামেরা-জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন (টিসিএ) আয়োজিত জাতীয় শোক দিবস-২০২৩ উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সমসাময়িক প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন। পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম প্রধান আলোচকের বক্তব্য দেন।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘৩৪ জন বুদ্ধিজীবীর বিবৃতি দেখলাম ড. ইউনূস সাহেবের পক্ষে। ড. ইউনুস সাহেবের প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই বলতে চাই কেন না তিনি একজন জ্যেষ্ঠ নাগরিক এবং নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। তিনি শ্রমিকের পাওনা বুঝিয়ে দেন নাই। তার প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের দেওয়ার কথা ছিলো ৫ শতাংশ, যা ১২শ’ কোটি টাকার বেশি। সেই ১২শ’ কোটি টাকাকে জালিয়াতির মাধ্যমে ঘুষ দিয়ে ৪শ’ কোটি টাকা করা হয় এবং সেটাও তিনি দেন নাই। এ জন্য মামলা হয়েছে, তারপর জরিমানা হয়েছে। এখন মামলা বিচারাধীন।’
তিনি বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে ৩৪ জন বুদ্ধিজীবীকে বলতে চাই আপনারা যে বিবৃতি দিলেন, শ্রমিকদের পক্ষে আপনাদের কোনো বক্তব্য নাই কেন? ১২শ’ কোটি টাকা শ্রমিকদের পাওনা ছিলো সেই পাওনা না দিয়ে সেটা জালিয়াতির মাধ্যমে কমিয়ে ৪শ’ কোটি টাকা করা হলো আর আপনারা সেটার পক্ষে বিবৃতি দিলেন! আপনাদের বুদ্ধিটা কি এখানে লোপ পেয়েছে, না কি বুদ্ধি খাটিয়ে শ্রমিকদের ঠকানোর জন্য বিবৃতিটা দিয়েছেন -এটি হচ্ছে আমার প্রশ্ন।’
এ সময় টিভি ক্যামেরা-জার্নালিস্টদের উদ্দেশে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, প্রকৃতপক্ষে টেলিভিশনের প্রাণ হচ্ছে ক্যামেরা সাংবাদিকরা। তারা শ্যুট না করলে প্রযোজক, পরিচালক, নিউজ এডিটর, নিউজ কাস্টারদের কোনো কাজ নাই।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ক্যামেরা সাংবাদিকদের কষ্ট করে রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়। অনেক সময় অনেকে তেড়ে আসে, ক্যামেরা ভেঙ্গে দেয়। অনেক ক্যামেরা সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হন। এ সমস্ত ঝুঁকি নিয়ে তারা কাজটা করেন এ জন্য তথ্যমন্ত্রী হিসেবে তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’
সকল টেলিভিশন চ্যানেলের কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘এই ক্যামেরা সাংবাদিকদের নিয়মিত বেতন প্রদান ও তাদেরকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত সার্বজনীন পেনশন স্কীমের আওতায় আনার অনুরোধ জানাই।’
পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম তার বক্তৃতায় বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই সেই অনন্য নেতা ছিলেন, রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধান হওয়ার আগেই পুরো বাঙালি জাতি যার কথা ও আদেশ মন থেকে মান্য করতো।’
টিসিএ সভাপতি শেখ মাহাবুব আলমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হক জীবনের সঞ্চালনায় সভায় ইঞ্জি. মো: এনামুল হক এমপি, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক, ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সদস্য সচিব শাকিল আহমেদ বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার নেপথ্য কুশীলবদের বিচার দাবি করেন।