প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। আজ সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩’র চূড়ান্ত এই অনুমোদন দেওয়া হয়। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় মন্ত্রিসভার বৈঠক।
পরে বিকেলে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে মন্ত্রিসভার বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আজকের বৈঠকে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩’র খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনের চারটি ধারা অজামিনযোগ্য। এই ধারাগুলো হলো ১৭, ২৯, ২৩ ও ৩৩। বাকী সব ধারাগুলোই জামিনযোগ্য করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত আইনের যে খসড়াটি ছিল, সেটিকে নমনীয় করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে মাহবুব হোসেন বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হওয়া চলমান মামলাগুলোর বিচার কাজ ডিজিটাল আইনেই চলবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সভায় ‘জাতীয় সংসদ ( সংরক্ষিত মহিলা আসন) নির্বাচন (সংশোধন ) আইন, ২০২৩’র খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে নির্বাচনে জামানতের টাকা ২০ হাজার করা হয়েছে। আগে এই জামানতের পরিমান ছিল ১০ হাজার টাকা। জাতীয় সংসদেও সাধারণ আসনের সংসদ সংসদ সদস্যদের জামানতের পরিমাণ ২০ হাজার টাকা। মাহবুব হোসেন বলেন, এছাড়াও জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসন শূন্য হলে সাধারণ আসনের মতো উপনির্বাচনের সময়সীমা ৯০ দিন করা হয়েছে। আগে ৪৫ দিনের মধ্যে উপনির্বাচন করার বিধান ছিল।
মাহবুব হোসেন বলেন, মন্ত্রিসভায় প্রস্তাবিত ‘ ভূমি সংস্কার আইন, ২০২৩’র খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এই আইন অনুযায়ী কেউ ৬০ বিঘার বেশি কৃষি জমির মালিক হতে পারবে না। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আইনটিকে শিথিল করা হয়েছে। সমবায় সমিতির মাধ্যমে চা, কফি ও রাবার বাগান, শিল্প প্রতিষ্ঠান বা কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম, রপ্তানীমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আইনটি শিথিল থাকবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘ ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩’র খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আইন ভঙ্গের শাস্তির বিষয়ে তিনি বলেন, কেউ আইন ভঙ্গ করলে শাস্তির পরিমান বাড়ানো হয়েছে। আইন ভঙ্গের জন্য আগে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করার বিধান ছিল। এখন তা বাড়িয়ে ১ লাখ টাকা করা, অনাদায়ে ১ মাস কারাদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত করা যাবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এছাড়াও ‘ বাণিজ্য সংগঠন( সংশোধন) আইন, ২০২৩’, ‘ ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০২৩’, ‘ নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক আইন, ২০২৩’, ‘ জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন আইন, ২০২৩’ ও ‘ বাংলাদেশ পেটেন্ট আইন, ২০২৩’র খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, যে আইনগুলোর চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, সে আইনগুলোকে জাতীয় সংসদের আগামী অধিবেশনে উপস্থাপন করা হবে।
মন্ত্রিসভায় অনির্ধারিত আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সর্বজনীন পেনশন স্কীম দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ইতোমধ্যে এক লাখেরও বেশি রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তিনি বলেন, কিন্তু অনেকেই এই পেনশন স্কীমের বিরুদ্ধে অপ্রচার শুরু করেছে। দেশের মানুষকে এই অপ্রচারের মাধ্যমে কেউ যাতে বিভ্রান্ত করতে না পারে, সেদিকে সতর্ক থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।