কখনো পরিচয় দিতেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত রাজনৈতিক সচিব, কখনো আবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উপ-সচিব, নিজেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক বলেও দাবি করতেন তিনি। বলেন, তিনি বর্তমানে আওয়ামী লীগের সদস্য। নাম বলেন শেখ আকাশ আহমেদ শরিফ (২৫), বাড়ি গোপালগঞ্জ। পরিধান করেন মুজিব কোট ও নৌকার ব্যাজ। এতসব পরিচয় দিয়ে মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে প্রতারণার অভিযোগে শরীফ উদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
১২ আগস্ট বুধবার বিকেলে নগরীর বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় ইটিল্যাব (ইউনানি) ফ্যাক্টরি থেকে তাকে আটক করা হয়। রাতে দৈনিক নবচেতনা অনলাইকে এসব তথ্য জানান পুলিশ সদর দফতরের গণমাধ্যম শাখার সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) সোহেল রানা।
এছাড়া তিনি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সাথে নিখুঁতভাবে ছবি জোড়া লাগিয়ে ব্যবহার করতেন। এসব ছবি ও ভিজিটিং কার্ড দেখিয়ে নানাভাবে তিনি মানুষের সাথে প্রতারণা ও বিভ্রান্ত করে আসছিলেন।
ছবিটি ফটোশপে এডিট করে প্রতারক নিজেই
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটক শরিফ জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আউটসোর্সিংয়ের কর্মী হিসেবে তিন মাস অফিস পিয়নের কাজ করতে গিয়ে বহিষ্কার হয়। ভোকেশনালে এসএসসি পর্যন্ত লেখাপড়া করলেও তিনি নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র বলে দাবি করেন।
পুলিশ জানায়, সম্প্রতি কুমিল্লা শহরতলির ধর্মপুর এলাকার বদরুল ইসলাম খান ও তার স্ত্রী হাবিবা ইসলাম খানের সাথে ফেসবুকে পরিচয় হয়। পরে প্রতারক শরীফ তাদের কাছে নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব পরিচয় দেয় এবং তিনি গণভবনে থাকেন জানিয়ে সপ্তাহ খানেকের মধ্যে কুমিল্লায় বেড়াতে আসতে চান।
এরই প্রেক্ষিতে বুধবার একটি মাইক্রোযোগে চার সঙ্গীসহ মোটরসাইকেলের একটি বহর নিয়ে ওই দম্পতির বাড়ি আসেন এবং পরে ওই দম্পতির মালিকানাধীন বিসিক শিল্প নগরীর ইটিল্যাব (ইউনানি) ফ্যাক্টরি পরিদর্শনে যান। অন্যদিকে প্রতারক শরীফের ফেসবুক আইডির লিংক ধরে কুমিল্লা জেলা পুলিশের সাইবার ইউনিট আগে থেকেই তাকে পর্যবেক্ষণ করছিল। তিনি যখন ওই কারখানায় যান তখন গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হয়ে বিকেল ৩টার দিকে তাকে চার সহযোগীসহ আটক করে।