ঈদুল আজহাকে সানে রেখে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে পশুর হাট বসানোর সময় এখনও হয়নি। কোথাও কোথাও হাটের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে ঈদুল আজহা সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রাজধানীর হাটগুলোতে আসতে শুরু করেছে কোরবানির পশু। তবে করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে এ বছর গরু নিয়ে ঢাকা আসা ব্যবসায়ীরা উচিত দাম নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা জানাচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত বেচাবিক্রি কেমন হয়, এ নিয়েও শঙ্কা তাদের মধ্যে।
২৫ জুলাই শনিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন অস্থায়ী হাটগুলোতে আসতে শুরু করেছে কোরবানির পশু। বিক্রেতারা তাদের পছন্দমত হাটের জায়গা দখল নিতে ব্যস্ত সময় পার করছে। যাতে সহজেই তাদের গরু ক্রেতার নজরে পড়ে। সেইসঙ্গে নেয়া হচ্ছে শেষ সময়ে পশুর বাড়তি যত্ন।
এবার রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশনে মোট ১৭ টি হাট বসবে। এরমধ্যে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৫টি অস্থায়ী, একটি কেন্দ্রীয় হাট বসবে এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ১১টি ।
এদিকে রাজধানীর পশুর হাটগুলোতে গরু আসলেও বেচাকেনা তেমনভাবে শুরু হয়নি। আরো দু-একদিন পরে বেচাকেনা শুরু হবে এবং হাট জমবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
২৫ জুলাই শনিবার রাজধানীর শনির আখড়া, কমলাপুর, পোস্তগোলা শ্মশান ঘাট সংলগ্ন বালুর মাঠের পশুর হাটসহ কয়েকটি হাটে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, ট্রাকে, টলারে করে কোরবানির পশু হাটে ঢুকছে। যেসব বিক্রেতা এরই মধ্যে হাটে এসে পৌঁছেছেন তারা তাদের পশুর যত্ন নিতে ব্যস্ত সময় পার করছে। এছাড়াও পশুর খাবার খাওয়াচ্ছে , কেউ কেউ গরুকে গোসল করাচ্ছে, আবার বৃষ্টির মধ্যে গরু যাতে কষ্ট না পায় তার ব্যবস্থা করতে দেখা গেছে।
২৫ জুলাই শনির আখড়া হাটের গরু ব্যবসায়ী আব্দুল কাদের ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘আজ ভোরে গরু নিয়ে এসেছি। সবকিছু ঠিকঠাক করছি। তবে হাট জমতে আরও কয়েকদিন লাগবে। তিনি এবার ২৫টি গরু নিয়ে এসেছেন। গত বছর ৪০টি গরু নিয়ে এসেছিলেন।’
এবছর কম নিয়ে এসেছেন কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘করোনার মধ্যে গরু নিয়ে আসা, থাকা, বিক্রি করা সব মিলিয়ে একটা ঝামেলা মনে হয়েছে। তাই এবার কম করে নিয়ে এসেছি। তবে আশা করছি ভালোভাবে বিক্রি করে বাড়ি ফিরতে পারবো।’ সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ কত টাকা দামের গরু আছে আপনার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘৫০ হাজার থেকে ১ লাখ এর উপরে দামের গরু আমার কাছে আছে।’
আর এক ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি ভালো না। তাই একটু আগেভাগেই গরু নিয়ে এসেছি। এখন ভালোভাবে বিক্রি করে বাড়ি ফিরতে পারলেই হয়।’ তিনি ১৫ টি গরু নিয়ে এসেছেন বলে জানান।
পোস্তগোলা শ্মশান ঘাট সংলগ্ন বালুর মাঠের হাটে কুষ্টিয়া থেকে ৪টি গরু নিয়ে এসেছেন মঙ্গল হোসেন। তিনি বলেন, ‘গরু ৪টা নিয়ে এসেছি। কিন্তু ঠিক দামে বিক্রি করতে পারবো কিনা চিন্তায় আছি। আমি গরুর দাম ২ লাখ করে চেয়েছি। কিন্তু ক্রেতারা ১ থেকে সোয়া লাখ টাকা দাম বলছে।’
রাজধানীর বিভিন্ন হাটের ইজারাদাররা ব্রেকিংনিউজকে জানান, কোরবানির পশু হাটে আসা শুরু হয়েছে। দিনরাত ২৪ ঘণ্টাই গরু আসবে। এমনকি ঈদের আগের রাতেও হাটগুলোতে গরু আসবে। এবার উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বন্যা পরিস্থিতির কারণে অনেক ব্যবসায়ী আগেভাগেই গরু নিয়ে এসেছেন।
পোস্তগোলা শ্মশান ঘাট সংলগ্ন বালুর মাঠের গরুর হাটের ইজারাদার মঈন উদ্দিন চিশতি ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে গরু আসা শুরু হয়েছে। আমরা সিটি কর্পোরেশন ও ডিএমপির নির্দেশনা অনুযায়ী সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। এখনও হাটে বেচাকেনা কেমন হয় তা উপরওয়ালা ভালো জানেন। তবে আমরা আশাবাদী।’
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর হাটগুলোতে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রত্যেক হাটে পুলিশের কন্ট্রোল রুম ওয়াচ টাওয়ার বসানো হচ্ছে। মানি এস্কর্ট ও জাল নোট সনাক্তকরণ মেশিনও বসানো হচ্ছে প্রতিটি বুথে।