নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনিছুর রহমান বলেছেন, নির্বাচনী দায়িত্ব যারা পালন করছেন তারা রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালন করছেন। তারা কোনো দলের কর্মচারী না। সংবিধানের ১২৬ নং অনুচ্ছেদে বলা আছে যে নির্বাহী বিভাগের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা দেওয়া। নির্বাচন কমিশনার প্রয়োজন অনুযায়ী যে কোনো কর্মচারীকে যে কোনো দায়িত্বে পাঠাতে পারেন। আর সেই দায়িত্বে অবহেলা হলে তাকে সেই অপরাধে দায়ী করা হবে। আইন যেভাবে চলার সেভাবে চলবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাচন কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে ১টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। আনিছুর রহমান আরও বলেন, নির্বাচন কোনো সিলেকশন হবে না। সুষ্ঠু ও অবাধ ভোটগ্রহণ হবে। ভোটারদের ভোট দিতে হবে। এবার ব্যালট পেপার ভোটকেুন্দ্রে সকালে যাবে। ব্যালট পেপার যে অংশটুকু ভোটারকে দেওয়া হবে সেই পেপারটিতে ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারের সিল থাকতে হবে। এটি ছাড়া কেউ ভোট দিলে সেই ভোট বাতিল ও অবৈধ বলে গণ্য করা হবে। এগুলো নির্বাচনী বিধিমালায় নতুন সংযোজন করা হয়েছে। তাছাড়া সকলেই এখন নির্বাচন কমিশনের আওতায় কাজ করছে। তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য যা যা পদক্ষেপ প্রয়োজন সব কিছু নেওয়া হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রত্যেক প্রার্থী ও তার পাঠানো প্রতিনিধির সঙ্গে কথা হয়েছে। তাদের সকলের অভিমত যে, কোনো রকম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়নি। ছোট-খাটো যে সমস্যাগুলো হয়েছে সেগুলো সন্তুষ্টচিত্তে সমাধান হয়েছে। সরকারের অনেক কাজই এখন রুটিনে দাঁড়িয়ে গেছে। রুটিন কোনো কাজ ছাড়া এই মুহূর্তে সরকারের আর তেমন কোনো কাজ নেই। সকলের প্রতি একটাই নির্দেশনা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে। জাতির জন্য, দেশ ও দেশের অর্থনীতির জন্য সুষ্ঠু নির্বাচন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। আনিছুর রহমান বলেন, নির্বাচনী আইনে আছে প্রতিটি পৌরসভার ওয়ার্ডে ১টি ও ইউনিয়নে ১টি করে প্রার্থীর অফিস থাকবে। এর বেশি যদি থাকে তাহলে সেগুলো স্থানীয় রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অপসারণ করতে হবে। তাছাড়া প্রচারণা সময়সীমা রাত ৮টা পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। এরপর যদি কেউ বাদ্যযন্ত্রের মাধ্যমে প্রচারণা চলায় তাহলে ব্যবস্থা নিতে হবে। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনে কোনো রকম ছাড় দেওয়া যাবে না। তিনি আরও বলেন, মোটরসাইকেল দিয়েও কোনো প্রচারণা চালানো যাবে। সেজন্য চেকপোস্ট বসিয়ে যে মোটরসাইকেলের বৈধ কাগজ নেই সেগুলোকে আটক করা হবে। শুধু মোটরসাইকেল নয়, কোনো রকম যানবাহন দিয়ে মহড়া করতে পারবে না। এগুলো যদি চোখে পড়ে তাহলে রিটার্নিং কর্মকতা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট যারা রয়েছে তাদের কাছে অভিযোগ দেবেন। আনিছুর রহমান বলেন, আগামী ২৯ ডিসেম্বর থেকে সেনাবাহিনী, বিজিবি মাঠে মোতায়েন থাকবে। এদিন থেকে সমগ্র নির্বাচনী এলাকা সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও ব্যাটালিয়ন আনসার কম্বাইনড টহল দেবে। যেখানে সহায়তার প্রয়োজন হবে সেখানেই সহায়তা দেবে। এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।