সিরাজগঞ্জের ৬টি সংসদীয় আসনে আওয়ামীলীগ, জাতীয় পার্টি, জাকের পার্টি, জাসদ, সুপ্রিমপার্টি, তৃনমুল বিএনপি, বিএনএম ও বাংলাদেশ ওয়াকার্স পার্টিসহ ৮টি দল ও ৩ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ ২৯ জন প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সোমবার সকাল ১১টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান এ প্রতীক বরাদ্দ দেন। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জ-১ (কাজিপুর ও সদরের একাংশ) আসনে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী প্রয়াত আওয়ামীলীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে দুইবারের এমপি তানভীর শাকিল জয় পেয়েছেন (নৌকা)। জাসদের প্রার্থী সাইফূল ইসলাম পেয়েছেন (মশাল), জাতীয় পার্টির জহুরুল ইসলাম পেয়েছেন (লাঙ্গল) ও বিএনএম পার্টির সবুজ আলী ইসলাম পেয়েছেন (নোঙ্গর)। সর্বশেষ ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ব্যতীত বর্তমানে প্রতিদ্বন্ধী দল ও প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশগ্রহন করেনি। আসনটিতে আওয়ামীলীগ প্রার্থী তানভীর শাকিল জয়ের নৌকার বিপক্ষে প্রতিযোগিতা গড়ে তোলার মতো দলীয় শক্তি ও জনসমর্থন অন্য কোন দলের প্রার্থীর নেই। সিরাজগঞ্জ-২ (সদরের একাংশ ও কাজিপুর) আসনে আওয়ামীলীগের মোছা. জান্নাত আরা হেনরী পেয়েছেন (নৌকা)। জাতীয় পার্টির আমিনুল ইসলাম ঝন্টু পেয়েছেন (লাঙ্গল), জাকের পার্টির আব্দুর রুবেল সরকার পেয়েছেন (গোলাপফুল), তৃনমুল বিএনপির সোহেল রানা পেয়েছেন (সোনালী আশ) ও বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সাদাকাত হোসেন খান বাবুল পেয়েছেন (হাতুড়ী)। ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ব্যতিত বর্তমানে প্রতিদ্বন্ধী দল ও প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশগ্রহন করেনি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে আওয়ামীলীগ প্রার্থী জান্নাত আরা হেনরীর নৌকার বিপক্ষে প্রতিযোগিতা গড়ে তোলার জনসমর্থন ও প্রতিদ্বন্ধী দলের প্রার্থীদের শক্ত ভিত নেই। এমনকি আসনগুলোতে অন্যান্য দলের যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে শতকরা ৯০ ভাগ ভোটাররা চেনেন না। ফলে শক্তিশালী প্রতিন্দ্বন্ধী না থাকায় আসনটিতে আওয়ামীলীগের বিজয় নিশ্চিত বলে মনে করছেন দলীয় ও সাধারন ভোটাররা। সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ) আসনে আওয়ামীলীগের ডা.আব্দুল আজিজ পেয়েছেন (নৌকা)। জাতীয় পার্টির জাকির হোসেন পেয়েছেন (লাঙ্গল) ও বিএনএমের গোলাম মোস্তফা পেয়েছেন (নোঙ্গর)। ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ব্যতিত বর্তমানে প্রতিদ্বন্ধী দল ও প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশগ্রহন করেনি। আসনটিতে আওয়ামীলীগ প্রার্থী ডা. আজিজের নৌকার বিপক্ষে প্রতিযোগিতা গড়ে তোলার মতো শক্তি অন্য কোনদলের প্রার্থীর নেই। আসনগুলোতে অন্যান্য দলের যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রায় ভোটররাই চেনেনা। ফলে শক্তিশালী প্রতিন্দ্বন্ধী না থাকায় আসনটিতে আওয়ামীলীগের বিজয় নিশ্চিত হবে বলে সাধারন ভোটাররা মনে করছেন। সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া) আসনে আওয়ামীলীগের শফিকুল ইসলাম শফি পেয়েছেন (নৌকা)। জাতীয় পার্টির হিল্টন প্রামানিক পেয়েছেন (লাঙ্গল) ও জাসদের মোস্তফা কামাল বকুল পেয়েছেন (মশাল)। ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধী দলের কোন প্রার্থীই নির্বাচনে অংশগ্রহন করেনি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে আওয়ামীলীগ প্রার্থী শফিকুল ইসলামের নৌকার বিপক্ষে প্রতিযোগিতা গড়ে তোলার মতো জনসমর্থন নির্বাচনে অংশগ্রহনকারী কোন দলের প্রার্থীর নেই। কারন আসনগুলোতে অন্যান্য দলের যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে ভোটাররা চেনেন না। ফলে শক্তিশালী প্রতিন্দ্বন্ধী না থাকায় আসনটিতে আওয়ামীলীগের বিজয় নিশ্চিত বলে ধারনা করছেন ভোটার ও সাধারন মানুষ। সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনে আওয়ামীলীগের আব্দুল মমিন মন্ডল পেয়েছেন (নৌকা)। স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেকমন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস পেয়েছে (ঈগল পাখি) কৃষক-শ্রমিক জনতালীগের নাজমুল হক পেয়েছেন (গামছা), বিএনপির বহিস্কৃত নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন পেয়েছেন (কেচি), জাতীয় পার্টির ফজলুল হক পেয়েছেন (লাঙ্গল) ও বিএনএম‘র আব্দুল হাকিম পেয়েছেন (নোঙ্গর)। অন্যান্য দলের প্রার্থী থাকলেও মুল লড়াই হবে আওয়ামীলীগ প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল মমিন মন্ডল (নৌকা) ও আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের (ঈগল পাখি) মধ্যে। কারন আব্দুল লতিফ বিশ্বাস শুধু এমপি ও মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেননি পর্যায়ক্রমে তিনি দুইবার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, একবার উপজেলার চেয়ারম্যান, একবার জেলা পরিষদের প্রশাসক, দুইবার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এ কারনে বেলকুচি-চৌহালীর মানুষের সাথে তার নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠেছেন। এছাড়াও দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী উপজেলার সদ্য পদত্যাগকারী উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সাজেদুল, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আলীসহ চারজন প্রার্থী, বেলকুচি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আশানুর বিশ্বাসসহ উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ এবং বেলকুচি পৌরসভার মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা, বেলকুচি ও চৌহালীর অধিকাংশ ইউপি চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের বিপুল নেতাকর্মী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসকে সমর্থন জানিয়ে মাঠে নেমেছেন। অন্যদিকে, চৌহালী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতিসহ ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের কিছু কিছু নেতাকর্মী নিয়ে নৌকার প্রার্থী আব্দুল মমিন মন্ডলও মাঠে রয়েছে। বেলকুচি-চৌহালীতে এই দুজন প্রার্থী ছাড়া অন্য প্রার্থীরা আলোচনা-সমালোচনা নেই বললেই চলে। চায়ের আড্ডা থেকে শুরু করে সর্বত্রই আলহাজ্ব আব্দুল লতিফ বিশ্বাস ও মমিন মন্ডলকেই আলোচনা-সমালোচনা চলছে। ভোটারদের মতে দুজনের মধ্যেই প্রকৃত হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনে আওয়ামীলীগের চয়ন ইসলাম পেয়েছেন (নৌকা)। আসনটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামীলীগ নেতা হালিমুল হক মিরু পেয়েছেন (ঈগল পাখি), জাতীয় পার্টির মোক্তার হোসেন পেয়েছেন (লাঙ্গল), জাসদের মোজাম্মেল হক পেয়েছেন (মশাল), বিএনএম পার্টির মোহাম্মদ শামীম পেয়েছেন (নোঙ্গর), তৃনমুল বিএনপির তারিকুল ইসলাম পেয়েছেন (সোনালী আশ), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির কাজী মো. আলামীনপেয়েছেন (একতারা) ও বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির রেজাউর রশীদ খান পেয়েছেন (হাতুড়ী)। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ব্যতিত যে সকল দল অংশগ্রহন করেছেন এসকল দলগুলো ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহন করেননি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে আওয়ামীলীগ প্রার্থী চয়ন ইসলাম (নৌকা) ও আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হালিমুল হক মিরুর (ঈগল পাখি) সাথে তুমুল লড়াই হবে। আসনটিতে অন্যান্যদলের প্রার্থীদের কোন আলোচনা-সমালোচনা নেই বললেই চলে। ভোটার মতে মতে অন্যান্য দলের সব প্রার্থী মিলে সর্বোচ্চ ২-৫ হাজার ভোট পেতে পারেন। এমনকি তাদের জামানতও বাতিল হবে বলে ভোটাররা মনে করছেন।