সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মসজিদের ইমাম মুফতি আবু জাফর।
জানাজার আগে বক্তব্য রাখেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির, মইনুল হোসেনের ভাই আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও বড় ছেলে জাবেদ হোসাইন।
জানাজায় আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল, সুপ্রিম কোর্ট আইজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলাম, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক আবদুন নূর দুলালসহ বিপুল সংখ্যক আইনজীবী অংশগ্রহণ করেন।
জানাজা শেষে তার কফিনে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়। আজিমপুর কবরস্থানে বাবা মায়ের পাশে তাকে দাফন করা হবে।
এর আগে, শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন মারা যান।
তার জুনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম ঢাকা পোস্টকে জানান, ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন গত কয়েকদিন ধরে তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শনিবার সন্ধ্যা ৬টার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন ২০০৭ সালে গঠিত বহুল আলোচিত ড. ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে গঠিত তত্ত্ববধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে তথ্য, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং ভূমি মন্ত্রণালয় এর দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালের ৮ জানুয়ারি তিনি বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার থেকে পদত্যাগ করেন।
মইনুল হোসেন ১৯৭৩ সালে পিরোজপুর থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশে বাকশাল প্রচলন করলে তিনি তার পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পরে তিনি খন্দকার মোশতাক আহমেদ পরিচালিত দল ডেমোক্র্যাটিক লীগে যোগ দেন এবং মোশতাক সরকারের পতন পর্যন্ত তিনি ডেমোক্র্যাটিক লীগেই ছিলেন। বাংলাদেশের সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে ২০০০-২০০১ মেয়াদে নির্বাচিত হন।
বিখ্যাত সাংবাদিক তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া তার পিতা। তিনি ১৯৬১ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তারপর মিডল টেম্পল এ আইন বিষয়ক পড়াশোনা করেন। ১৯৬৫ সালে বার থেকে ব্যারিস্টার-ইন-ল ডিগ্রি অর্জন করেন।