ফরিদপুরে ধর্মীয় উগ্রবাদের কোন স্থান নেই হুশিয়ারী দিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক বলেছেন যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না তাদের পক্ষেই প্রতিমা ভাঙচুরের মত ঘৃণিত কাজ করা সম্ভব। আসন্ন দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে একটি গোষ্ঠী সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা করছে। ফরিদপুর সদর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের তাম্বুলখানায় সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুরের প্রতিবাদ ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবীতে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইউনিয়নের তাম্বুলখানা বাজারে এ প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে ফরিদপুর জেলা আওয়ামীলীগ। প্রতিবাদ সমাবেশে আওয়ামীলীগ সব সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী দাবি করে শামীম হক বলেন ফরিদপুর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি জেলা। তিনি বলেন ১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার পর জিয়ায়ুর রহমান সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করেছিলো। তখন হিন্দুরের চাকরি ক্ষেত্রেও সমান অধিকার ছিলো না। তবে বঙ্গবন্ধু কণ্যা আওয়ামীলীগ সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় এসে এসব ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে সকল ধর্মের নাগরিক দের মেধা ভিত্তিক চাকরির সুযোগসহ দেশের সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব নিরসন করার পাশাপাশি যে কোন ধর্মের নাগরিকদের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছেন। তারপরেও যদি কোন গোষ্ঠি সাম্প্রদায়িক দ্বন্দের মত ঘৃনিত অপরাধের দু:সাহস দেখায় তাহলে জনগনদের সাথে নিয়ে তার দাত ভাঙ্গা জবাব দিবে ফরিদপুর জেলা আওয়ামীলীগ। একই সাথে ইউনিয়নের তাম্বুলখানা সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুরের প্রতিবাদ ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবী জানিয়ে এবছর ফরিদপুরের ১৯৬ পুজা মন্ডবে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করার পরামর্শ দেন। এ ছাড়াও প্রতিমা পুন: নির্মানের জন্য আর্থিক সহযোগিতা করারও আবেদন জানান শামীম হক। এ সময় ফরিদপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মোঃ ইশতিয়াক আরিফ, সহ-সভাপতি মাঈন উদ্দিন মানু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র অমিতাভ বোসসহ জেলা আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত গত সোমবার দিবাগত রাত ১টা থেকে গত মঙ্গলবার ভোরের মধ্যে ফরিদপুর সদরের কৈজুরি ইউনিয়নের তাম্বুলখানা বাজার সংলগ্ন সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরে দুর্গা পূজা উপলক্ষে নির্মিত দুর্গা, লক্ষ্মী ও সরস্বতী প্রতীমার একটি করে হাত এবং গণেশ প্রতীমার মাথা ভেঙ্গে ফেলা হয়। এ খবর পেয়ে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো: শাহজাহান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সালাহউদ্দিন, সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিটন ঢালী, কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল ঘটনাটি ঠিক নাশকতা বলে মনে হচ্ছে না দাবি করে একটি দুষ্টচক্র এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন বলে জানিয়েছিলেন। একই সাথে প্রতীমার ভাঙ্গা অংশের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে এ ঘটনার সাথে জড়িত ব্যাক্তিদের সনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।