রংপুর মহানগরীর পরশুরাম থানার অন্তর্ভুক্ত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) পরশুরাম শাখার কয়েকজন কর্মকর্তা কর্তৃক হয়রানীমূলক মামলার প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে একজন ভুক্তভুগী। মঙ্গলবার দুপুরে রংপুর রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন ভুক্তভোগী খলিলুর রহমান। তিনি বলেন, আমি বিগত ২০১৫ সালের ১৭ নভেম্বর রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) পরশুরাম শাখা রংপুর থেকে গরু মোটাতাজাকরন প্রকল্পের উপর জমি বন্ধকী দলিল দিয়ে সাত লক্ষ টাকা ঋণ গ্রহন করি। টাকা পরিশোধ করতে করতে তাদের প্রতারণার কবলে পড়ে ব্যাংকের কাছে অক্ষম হয়ে পরি। সমুদয় টাকা পরিশোধ করার পরেও আমার অজান্তে ২০২১ সালে আমার উপর অর্থঋণ মামলা করে ওই ব্যাংকে কর্মরত কয়েকজন কর্মকর্তা। মামলা হওয়ার পরও আমি ব্যাংকের কিস্তি পরিশোধ করি তখনও আমাকে জানানো হয় নাই যে, আমার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আমার লোনের টাকা পরিশোধের সমস্ত ভাউচার আমার কাছে সংরক্ষিত আছে। ব্যাংক আমার কাছে আসল ও স্বাভাবিক সুদ এবং অন্যান্য খরচসহ ৭,৩৪,১৭৪.১৩ টাকা ডিক্রী গ্রহন করে। তারপর আমি আপিল করে মামলাটি উজ্জীবিত করি। এর পর ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত স্টেন্টমেন্ট পর্যালোচনা করে দেখতে পাই, আমি যে টাকা পরিশোধ করেছি সে টাকার অনেকগুলো ভাউচার ব্যাংক ভলিউমে প্রদর্শিত হয়নি। উল্লেখিত লোনের টাকার পরিশোধিত জমা রিসিভ আমার নিকট সংরক্ষিত রয়েছে। ব্যাংক আমার কাছে ২৪/০৬/২০১৯ ও ২৭/০৬/২০১৯ ইং তারিখে মোট ১,৩৮,৯৭৭/- টাকা সুদ ধরে জালিয়াতীর মাধ্যমে ব্যাংক স্টেন্টমেন্টে প্রদর্শিত করে আমার উপর মামলা করে। অথচ, আমি এখন পর্যন্ত ব্যাংকের কাছে পরিশোধ করেছি ৭,৯১,০২৫ টাকা। ব্যাংক কর্তৃক বেশি সুদ ধার্য্য করেছে ১,৩৮,৯৭৭ টাকা।হিসেব করে দেখা যায়, ব্যাংক আমার কাছে অতিরিক্ত ১,৯৫,৮২৭.৮৭ টাকা গ্রহণ করেছে। আমি ব্যাংকের কাছে ১,৯৫,৮২৭.৮৭ টাকা পাবো। এরপরেও কয়েকজন কর্মকর্তা যোগসাজশে আমার বিরুদ্ধে ভুল স্টেটমেন্ট জমা দিয়ে নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য হয়রানীমূলক মামলা করেছে। ভুক্তভোগী খলিলুর রহমান এ সময় অভিযুক্ত ১০ জন কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করেন। খলিলুর রহমান জানান আমি রাকাত এর ১০ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। অভিযুক্ত কর্মকর্তারা হলেন, অম্বরীষ মহস্ত ব্যবস্থাপক,রাকাব কুড়িগ্রাম চিলমারী শাখা। মাইদুল ইসলাম ডিজিএম বিভাগীয় প্রধান কার্যালয় রাজশাহী। আলতাফ হোসেন ব্যবস্থাপক রাকাব, পায়রাবন্দ শাখা, মিঠাপুকুর, রংপুর। জিকিরিয়া, কর্মকর্তা রাকাব, জোনাল কার্যালয়, রংপুর। নবীউল ইসলাম জোনাল ব্যবস্থাপক রাকাব জোনাল কার্যালয়, নওগাঁ। হাফিজুল ইসলাম ডিজিএম, শাখা নিয়ন্ত্রন বিভাগ, প্রধান কার্যালয় রাজশাহী। ইত্তেখারুজ্জামান রাকাব কার্যালয় রংপুর। কর্মকর্তা (অবসর) রাকাব, জোনাল কার্যালয় রংপুর। মাহাবুব রহমান কর্মকর্তা (সুপার ভাইজার) রাকাব রংপুর শাখা রংপুর। খালেকুজ্জামান কর্মকর্তা (অবসর) সুপার ভাইজার রাকাব জোনাল কার্যালয়, রংপুর। আবু রুহেল মোঃ ওয়ায়েস আল করনি ব্যবস্থাপক রাকাব, কাউনিয়া শাখা, রংপুর। শুধু লোনের মাধ্যমে জালিয়াতী করে তারা ক্ষ্যান্তো হয়নি। আমাকে লোনের দায়ে এই ব্যাংকের নিরাপত্তা প্রহরীর পদ থেকে ১২/০৭/২০২৩ সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে। আমার টাকা তসরুপ করে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বুঝ দেওয়ার জন্য আমার উপর মিথ্যা অসত্য ভাবে ঋণ দেখিয়ে যাহা প্রতারনাসহ অপরাধমুলক বিশ্বাস ভঙ্গের শামিল। এ ঘটনায় আমি আপনাদের মাধ্যমে সু-বিচার চাই। উল্লেখ্য যে, অর্থ ঋণ ১৯/২১ ইং মোকদ্দমার বর্ণনায় আমি মোট কত টাকা পরিশোধ করেছি বা কত টাকা সুদ হয়েছে। তার বর্ণনাা প্রদান না করেই ভাষাভাষা বর্ননার মাধ্যমে মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে আমার বিরুদ্ধে অন্যায় ভাবে ডিক্রী অর্জন করে। আমি রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের কাছে দাবিকৃত সর্বমোট ১,৯৫,৮২৭.৮৭ টাকা পাবো।আপনাদের লিখনির মাধ্যমে এর একটা সুষ্ঠ সমাধান চাই। খলিলুর রহমান আরও বলেন, আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করায় পরিবার-পরিজন নিয়ে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছি। এই হয়রানীমূলক মামলায় অনেক টাকা ক্ষতিগ্রস্ত সহ আমার সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে। অপরাধ না করেও ঋণ খেলাপির দায়ে মামলা মাথায় নিয়ে আদালতের দারস্থ হয়েছি। আমি আপনাদের মাধ্যমে শিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এই নেককারজনক ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ন্যায় বিচার চাই।