বগুড়ার ধুনটে যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলন কেন্দ্র করে সংঘর্ষে মহিলাসহ ১২ জন আহত হয়েছে । উপজেলার ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের কৈয়াগাড়ীতে এই ঘটনা ঘটে । এবিষয়ে ধুনট থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ।
যুবলীগ নেতা বেলাল হোসেন হোসেন বাদী হয়ে অভিযোগ করেন, ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের চৌবেড় মৌজার ৪২টি দাগের ৩৬.৯৩ একর সম্পত্তির সরকারী বালু মহল ৬ মাসের ইজারা নিয়ে ২০২২ সালের ২রা অক্টোবর থেকে বালু উত্তোলন করে আসছেন। কিন্তু ৪ঠা মার্চ শনিবার ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের কৈয়াগাড়ী গ্রামের ফজলুল হক সরকারের ছেলে মোঃ ফরিদুল ইসলাম ডলার(৪০) বালু উত্তোলনে বাধা প্রদান করে এবং চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না পাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে নৌকা ভাংচুর ও ড্রেজার কর্মচারীদের মারধর করেন । আহত অবস্থায় মোঃ জহুরুল ইসলাম, মোঃ রাসেল মাহমুদ, আঃ মমিন, মোঃ জুয়েল, মোঃ ইকরাম ও মো জামিলকে উদ্ধার করে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
অন্যদিকে ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম ডলারের বোন ফরিদা ইয়াসমিন অভিযোগ করেন, খরা মৌসুমে নির্ধারিত বালু মহল চৌবেড় মৌজায় চর জেগে ওঠায় বালু উত্তোলনে ব্যর্থ হয়ে যুবলীগ নেতা বেলাল হোসেন বৈশাখী, শহরাবাড়ী, শিমুলবাড়ী, বানিয়াযান, কৈয়াগাড়ি ও নিউ সারিয়াকান্দি এই ৬টি মৌজা থেকে অবৈধ ভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে গত ৩ মাস ধরে রাতদিন অবৈধ ঞ্জভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। এভাবে নদীর তীরবর্তী স্থান থেকে বালু উত্তোলনের ফলে যমুনা নদীর ভাংঙ্গন প্রতিরোধে ২০০২ সালে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বানিয়াযান স্পার, ৪০ কোটি টাকা ব্যায়ে শহরাবড়ি স্পার ও ২০১৬ ৩শ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্প (রিভেটমেন্ট), বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সহ ভাণ্ডাবাড়ি ইউনিয়নের প্রায় ১০টি গ্রাম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির ও সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসহ কোটি কোটি টাকার স্থাপনা হুমকির মুখে পড়ছে । ইতিপূর্বে বানিয়াযান গ্রামের আমিনুল ইসলাম পলাশ ও বানিয়াযান গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বুদা অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করতে এলাকাবাসী গন স্বাক্ষর দিয়ে ৩ মাস আগে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ এবং মানববন্ধন করে কোন প্রতিকার পাননি । তাই ৪ঠা মার্চ শনিবার গ্রামবাসী ভিটামাটি রক্ষার জন্য অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেয়। ক্ষিপ্ত হয়ে বেলাল হোসেনের লোকজন এলাকাবাসীর উপর হামলা চালায় এতে ফরিদুল ইসলাম ডলার, ফজললু হক সরকার ওরফে ফুল মিয়া (৭০), বুদা মেম্বার(৪৫) ইয়াকুব আলী মাষ্টার(৫০) মাসুম ও মুক্তি খাতুন। এর মধ্যে ফরিদুল ইসলাম ডলার ও ফজলুল হক ফুল মিয়াকে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকীরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
এ বিষয়ে ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ রবিউল ইসলাম জানান, বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে মারধরের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ হয়েছে, ঘটনা জানার পর বিষয়টি তদন্তের জন্য উপ পরিদর্শক আসাদুজ্জামানকে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সত্যতা মিলেছে, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।