স্বপ্ন বাস্তবায়নে নীলফামারীর জলঢাকা ও ডিমলা উপজেলার ১ হাজার ২ শত ১৭ একর আয়তনের বুড়ি তিস্তা জলধারা পুনঃখননের কাজ এগিয়ে চলছে। এতে প্রতিবছর ৭২ কোটি টাকার ফসল উৎপাদন ও সাড়ে ১৫ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।
নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৫ সাল হতে ২০১০ সাল পযর্ন্ত প্রকল্পটি চলমান ছিল। পরে বিভিন্ন কারনে প্রকল্পটি দীর্ঘদিন দিন বন্ধ থাকায় পলি জমে জলধারাটির তলদেশ ভরাট হওয়ায় পানি ধারন ক্ষমতা কমে যায়।
ফলে প্রকল্পটি চালু করার জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ড উদ্যোগ গ্রহণ করে। প্রকল্পটি চালু ও জলধারাটি থেকে ৫ হাজার ৫ শত একর (২২৩২) হেক্টর জমিতে সেচের পানি সরবরাহের নিম্মিক্তে তিস্তা তিস্তা সেচ প্রকল্পের সাথে সমন্বিত করে একনেকের সভায় ১৪৫২.৩৩ কোটি টাকা ব্যায়ে তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকায় পূর্বাসন ও সম্প্রসারণ নামক প্রকল্প অনুমোদন দেয়।
প্রকল্পের আওতায় ৬৬৭ একর জলধারায় ৫ টি প্যাকেজের প্রায় ৯৯ কোটি টাকা ব্যায়ে পুনঃখননের কার্যাদেশ প্রদান করে এবং প্রকল্পটি ২০২৪ সালের ৩১ শে ডিসেম্বরে সমাপ্ত হবে।
পাশাপাশি প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করা বতর্মান বেকার জেলে পরিবার গুলো বিশাল কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
রামডাঙ্গা ভূতকুড়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি অবিনাশ চন্দ্র দাস বলেন, আমরা গরিব মৎস্যজীবী, আমরা পাইনা কৃষাণী মজুরি করিবার আমাদের তো খুব কষ্টে দিন যাচ্ছে। এখন যদি বুড়ি তিস্তা প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয় তাহলে আমরা উপকৃত হব,এখানকার বেকার জেলেদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। আমরা চাই দ্রুত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হউক।
নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আব্দুল হান্নান প্রধান বলেন, ১ হাজার ২ শত ১৭ একর আয়তনের বুড়িতিস্তা নদীর জলধারা পুনঃখনন করা হচ্ছে। জলধারাটি থেকে এলাকার কৃষকরা ৫ হাজার ৫ শত একর (২২৩২) হেক্টর জমিতে আমন ও বোরো মৌসুমে নিরবিচ্ছিন সেচের পানি পাবে। এর ফলে প্রতি বছরে প্রায় ২৬ হাজার মেটিক্ট টন ফসল উৎপাদন হবে যার বাজার মূল্য ৭২ কোটি টাকা। ভূপরিস্থ উর্বর পানি গ্রাভিটি ইরিব্রেশন পদ্ধতিতে ব্যবহার আবহওয়ায় অতিরিক্ত ফসল উৎপাদন, জ্বালানি ও সার সহ বছরে সাড়ে ১৫ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।
এ বিষয়ে নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কৃষ্ণ কমল সরকার বলেন, ৬০ দশকের তৎকালীন সরকার বুড়িতিস্তা নদীর সেচ প্রকল্পটি তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের মডেল হিসেবে গ্রহণ করে বুড়িতিস্তা নদীতে ব্যারেজ নির্মাণ করে পানির সমতা বৃদ্ধি করে প্রধান খাল ও শাখা খাল সমূহের মাধ্যমে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে প্রত্যেক সেচ মৌসুমে প্রকল্প এলাকার সম্পূরক সেচ প্রদানের উদ্দেশ্যে প্রকল্পটি গৃহীত হয়েছিল। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সেচের পাশাপাশি পরিবেশের উন্নয়ন, ভূগর্ভস্থ পানির লেয়ির বৃদ্ধি এবং মৎস্য সম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে যা জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে।