দিনাজপুর বিরামপুরে রেল স্টেশনের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেল জাদুঘর দেখার উৎসুক জনতার ভিড় দেখা গেছে। (২৫ শে ফেব্রুয়ারি ২০২৩) দিনাজপুর বিরামপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেল জাদুঘরটি বিরামপুর রেলস্টেশনে আসায় এলাকার জনসাধারণের বেশ ভিড় দেখা গেছে।
উক্ত বিষয়ে সরজমিনে জানা যায় উক্ত রেল বগিটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জাদুঘর হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। যার ভিতরে রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তথা তার শাসনামলের বিভিন্ন চিত্র। গত ২৭ এপ্রিল রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরের উদ্বোধন করা হয়। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ জাদুঘর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগস্টের প্রথম দিন থেকে দেশের নানা প্রান্তে যাচ্ছে রেলের দুটি ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর। এড়িয়ে পর্যায়ে বিরামপুর রেলস্টেশনে ২৩শে ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখ বিরামপুর রেলস্টেশনে আসেন।
২৫ শে ফেব্রুয়ারি-২০২৩ সকাল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমান রিয়াল জাদুঘরটি উৎসব জনতার জন্য খুলে দেওয়া হয়। উক্ত ভ্রাম্যমান জাদুঘরে রয়েছে,জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের নানা দিক,ভাষা আন্দোলন,৬ দফা,৬৯-এর গণআন্দোলন, ৭০-এর নির্বাচন,স্বাধীনতার ঘোষণা, মুজিব নগর সরকার,মুক্তিযুদ্ধ ও ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয়ের নানা ইতিহাস নিয়ে সাজানো হয়েছে বঙ্গবন্ধু রেল জাদুঘর। ট্রেনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত একটি বগিকে সুসজ্জিত করে এ জাদুঘরের রূপ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের উদ্যোগে সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য জীবনগাঁথা ছড়িয়ে দিতে মুজিববর্ষ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরের সূচনা। আগস্টের প্রথম দিন থেকে দেশের নানা প্রান্তে যাচ্ছে রেলের দুটি ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর। সেই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার রাতে বিরামপুর রেলস্টেশনে আসে ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর। বিরামপুরের মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে জাদুঘরটি। জাদুঘরটিতে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক জীবন,মুক্তিযুদ্ধ,জীবনকাল আর সংগ্রামী ইতিহাস সংবলিত ভিডিও প্রদর্শন করা হচ্ছে,অডিও সিস্টেমে সম্প্রচার করা হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ।
জাদুঘরে শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর পৈতৃক বাড়ির ছবি,ব্যবহৃত চশমা,দলের প্রতীক নৌকা,কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার,বঙ্গবন্ধুর প্রিয় তামাক পাইপ ও মুজিব কোট। এছাড়া মুজিব শতবর্ষের লোগো,বঙ্গবন্ধুর লেখা বই,মুজিবনগর স্মৃতিস্তম্ভ,পাকিস্তানিদের আত্মসমর্পণ,জাতীয় স্মৃতিসৌধ,বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধের রেপ্লিকাও রয়েছে। এ জাদুঘরে ১৯২০-১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ১২টি গ্যালারির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু,মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।
জাদুঘরটিতে আরো রয়েছে জয়বাংলা স্লোগানের আদলে তৈরি করা সৃজনশীল একটি বুক শেলফ।
সেখানে শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী,আমার দেখা নয়া চীন’সহ তার কর্মজীবনের ওপর রচিত গুরুত্বপূর্ণ বই। রয়েছে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে শেখ হাসিনার লেখা বই ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’। ‘জয় বাংলা বুক শেলফে ৮০-১০০টি বইয়ের মধ্যে রয়েছে শিশুদের জন্য বঙ্গবন্ধুর ওপর রচিত বিভিন্ন লেখকের বই। বিরামপুর রেলস্টেশনে আসার পর থেকেই জাদুঘরটি দেখতে ভিড় জমান নগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নানা বয়সি দর্শনার্থী। ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর দেখতে আসা শিক্ষার্থীরা বলেন,বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতির জনক। এ জাদুঘরের মাধ্যমে আমরা বঙ্গবন্ধুর জীবনের নানা দিক সম্পর্কে জানতে পারছি।
স্কুল শিক্ষিকা গণ বলেন,ইচ্ছা থাকলেও আমাদের নানা ব্যস্ততার কারণে জাদুঘরে গিয়ে বঙ্গবন্ধু,মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানা হয়ে ওঠে না। কিন্তু ভ্রাম্যমাণ এ জাদুঘর মানুষের কাছে চলে আসায় এসব ইতিহাস সহজে জানতে পারছে সবাই।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান সম্পর্কে তৃণমূলের মানুষকে জানানোর জন্য রেলের এ উদ্যোগ সাড়া জাগিয়েছে।