শেরপুরে নবজাতক কন্যা শিশুকে নিয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন নারজিনা আফরিন তৃষা। তিনি শেরপুর সরকারি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। সরকারি মহিলা কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। জানা যায়, কলেজে থাকাবস্থায় গত বছরের ১৯শে নভেম্বর শ্রীবরদী উপজেলার গড়জরিপা ইউনিয়নের মৃত শিক্ষক রফিকুল ইসলাম আকন্দের মেয়ে নারজিনা আফরিন তৃষার সাথে বিয়ে হয় শেরপুর শহরের সজবরখিলা এলাকার মো. আনোয়ার হোসেনের ছেলে মেহরাব হাসান মুনের। চলতি বছরের ২রা নভেম্বর শেরপুর শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাদের একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। ৬ নভেম্বর রবিবার থেকে তৃষার এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়। তৃষার ই”ছা নবজাতক শিশুকে নিয়েই পরীক্ষায় অংশ নেবেন। গেল রবিবার বাংলা প্রথম পত্র ও মঙ্গলবার বাংলা দ্বিতীয় পত্র লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। এদিকে শিশু কন্যাকে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্র চত্বরে অপেক্ষা করছেন তার শাশুড়ি মোছা. সুলতানা মোহসিনা। পরীক্ষার্থী তৃষা জানান, আমি পরীক্ষা ভালোই দিচ্ছি। এখানে স্যারদের সহযোগিতা পাচ্ছি। কিন্তু দীর্ঘ সময় বসে থেকে পরীক্ষা দেওয়ার কারণে শারীরিক কিছু সমস্যা হয়। তিনি আরও জানান, আমার শাশুড়ি মা পরীক্ষার সময় আমার মেয়ের দেখা-শুনা করেন। আমার স্বামী ও পরিবারের সবাই আমাকে বেশ উৎসাহ দেন। সেই সাথে আমার নিজেরও আগ্রহ ছিলো পড়াশোনা শেষ করার। এজন্যই পরীক্ষাটা দিতে পারছি। তা না হলে চারদিনের বা”চা নিয়ে পরীক্ষা দিতে আসতে পারতাম না। তৃষার শাশুড়ি মোছা. সুলতানা মোহসিনা বলেন, আমার বউমা খুবই মেধাবী একজন শিক্ষার্থী। তার ইচ্ছে শক্তিও প্রচুর। এজন্য আমরা তাকে সাহস ও উৎসাহ দিচ্ছি সব সময়। শেষ পর্যন্ত পড়াশোনা করতে চায়। আমরা তার পাশে থাকবো। সে যখন পরীক্ষা দেয় তখন আমি পরীক্ষা কেন্দ্রের পাশেই নাতনিকে নিয়ে বসে থাকি। আমাকেও কেন্দ্রে আগত অন্যান্য অভিভাবক ও শিক্ষকরা সহযোগিতা করছেন। এ বিষয়ে শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও কেন্দ্র সচিব মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ওই পরীক্ষার্থী তার শ্বাশুড়ি মার কাছে বাচ্চা রেখে এই কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে। তার পরীক্ষা দিতে কোন প্রকার সমস্যা না হয় এজন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছি।