পাবনায় এই প্রথম পরীক্ষামুলক ভাবে আবাদ হচ্ছে লাল-সাদা রংয়ের জাপানী ওয়াকিনাওয়া ও মুরাসাকি জাতের মিষ্টি আলু। কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় জাপান থেকে এ আলুর বীজ আমদানী করা হয় ২০২১ সালে। আমদানীকৃত বীজ প্রথমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার কল্যানপুর হর্টিকালসার সেন্টার থেকে সম্প্রসারন করে সেটা পরীক্ষা মুলক আবাদের জন্য পাবনা পাঠানো হয়েছে। বেলে দো-আশ মাটিতে এ ফসলটির ভাল ফলন পাওয়া যায় বলে জানান অভিজ্ঞরা। খাদ্য গুন সম্পন্ন এ ফসলটি আবাদ সফল হলে মানব দেহের অনেক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে বলে জানান কৃষিবিদগন।পাবনা কৃষি সম্প্রসারন অধিদফতর সুত্রে জানা যায়, পাবনার আটঘড়িয়া উপজেলায় ২০ শতক জমি প্রদর্শনী আকারে বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যে আবাদ করা হয়েছে। সেখান থেকে গুল্ম জাতীয় বীজ পাবনা শহরের খামার বাড়ীর পরিত্যাক্ত ১০ শতক জমিতে পরীক্ষা মুলক আবাদ করা হয়। সেখানে বেশ ভালো ফলন লক্ষ্য করাগেছে। এ ফসলটি ফল ও গুল্ম থেকে বীজ উৎপাদন করা যায়। পুষ্ঠি বিশেষজ্ঞগনের মতে, হাই ফাইবার, বিটাকেরোটিন, এন্টিঅক্সিডেন্ট, এ্যানসোসায়ানিন, ম্যাংগোনিজ, পটাশিয়াম, আয়রনসহ বিভিন্ন খাদ্যগুন রয়েছে এ আলুতে। এর ফলে মানদেহের হৃৎপিন্ডের দূর্বলতা,ক্যন্সার, স্তনক্যান্সার, ডায়েবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। পুষ্ঠিগুন বেশী থাকার কারনে জাপানীজরা এ ফসলটি পাউডার করে খাবার সাথে খেয়ে থাকে। ফলে তাদের আয়ু বৃদ্ধি ছাড়াও মরন ব্যাধি ওই সকল রোগ কম হয় বলে পুষ্ঠিতত্ত্ববিদ গনের সুত্রে জানা গেছে। কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ মোখলেসুর রহমান জানান, ২০২১ সালে এ বীজ জাপান থেকে আমদানী করা হয়। আমাদের দেশে আবাদের জন্য ত্রিশটি জেলায় এ বীজ সম্প্রসারনের কাজ চলছে। দীর্ঘ সময়ে এ বীজের সম্প্রসারন ও মাঠ পর্যায়ে কৃষকের হাতে এ বীজ পৌছায়নি কেন জানতে চাওয়া হলে, তিনি বলেন, বেশ কিছু কৃষকের হাতে এ বীজ পৌছানো হয়েছে এবং তারা ফসল উৎপাদন করে সল্প পরিসরে বাজারে আনতে শুরু করেছে। ফসলটি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হবার কারনে গ্রাহকের হাতে পৌছাতে সময় লাগছে। তিনি আরো বলেন, নতুন একটি ফসল গ্রাহক পরিচিতি ঘটাতে বেশ সময়ের প্রয়োজন হয়। পাবনা কৃষি সম্প্রসারনের উপ-পরিচালক ড. জামাল উদ্দিন বলেন, জাপানী মিষ্টি আলু এবার প্রথম পাবনা জেলাতে চলতি বছরের জানুয়ারী মাস থেকে প্রদর্শনীর মাধ্যমে আটঘড়িয়াতে আবাদ করা হচ্ছে। সেখান থেকে কিছু গুল্ম বীজ এনে সরকারী পরিত্যাক্ত ১০ শতক জমিতে পরীক্ষা মুলকভাবে আবাদ করা হয়েছিল। এতে ভাল উৎপাদন হয়েছে। ফসলটির আয়ুষ্কাল ১২০ দিন। আশা করা যাচ্ছে এ দেশর আবহাওয়ায় ফসলটির ভাল ফলন পাওয়া যাবে। বেলে দো-আঁশ মাটি আলুটি উৎপাদনের জন্য উপযোগী, আর পাবনার প্রায় প্রতিটি উপজেলাতে এ ধরনের মাটির অসতিত্ত্ব রয়েছে। পাবনার কৃষি বিভাগ এ ফসলের বীজ সংরক্ষনের উদ্যোগ নিয়েছে। গুল্ম ও ফল থেকে ফসলটি বীজ তৈরী করা হরে। এরই মধ্যে বিভিন্ন কৃষক ফসলটি আবাদের জন্য ৫ টাকা ফিট দরে গুল্মবীজ খরিদ করছে।