নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকার লাউতলা খালের পাড়ে ১০ তলা একটি ভবনের নির্মাণকাজ চলছিল। নির্মাণাধীন ভবনটির ৭০ ভাগই খালের জায়গা দখলে নিয়ে করা বলে জানায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এ কারণে নির্মাণাধীন ভবনটির অবৈধ অংশ ডিএনসিসি ভেঙে ফেলছে। গতকাল শুক্রবার সকালে ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে নির্মাণাধীন ভবনের অবৈধ অংশ ভাঙার কাজ শুরু হয়। বেলা একটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এই কাজ চলছিল। একই খালের জায়গা দখল করে বানানো আরও দুটি স্থাপনা গতকাল ভেঙে ফেলা হয়েছে। এর একটি একতলা পাকা স্থাপনা, অপরটি একতলা আধপাকা স্থাপনা। গতকাল বছিলা এলাকার লাউতলা খালে পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালাচ্ছে ডিএনসিসি। পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ডিএনসিসিকে সহায়তা করছেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিডি ক্লিনের দেড় হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবী। অভিযান শুরুর আগে গতকাল সকাল পৌনে ১০টার দিকে বছিলায় অবস্থিত পশ্চিমাঞ্চল পুলিশ লাইন মাঠে (বছিলা ট্রেনিং একাডেমি) ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বিডি ক্লিনের স্বেচ্ছাসেবীদের শপথবাক্য পাঠ করান। সেখানে তিনি বলেন, খালে যাঁরা ময়লা ফেলেন, তাঁদের মস্তিষ্কে ময়লা আছে। তাঁদের মনে ময়লা আছে। তাঁরা সুনাগরিক নন। খালে ময়লা ফেলে নিজেদের সুনাগরিক দাবি করা যায় না। ঐদিন সকাল ১০টার দিকে লাউতলা খাল পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়। এ সময় স্বেচ্ছাসেবীদের উৎসাহ দিতে মেয়র আতিকুল ইসলাম নিজে খালে নেমে ময়লা পরিষ্কারের কাজ করেন। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মৃত এই খালকে আবার জীবিত করতে চান বলে জানান ডিএনসিসি মেয়র। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কোনো দখলদারকে নোটিশ দেওয়া হবে না। খালের ১০০ ফুটের মধ্যে যা যা পড়বে, সব ভেঙে ফেলা হবে। অবৈধ স্থাপনা ভাঙা না হলে দেখাদেখি আরেকজন খাল দখল করবেন। বেলা ১১টার দিকে লাউতলা খালের পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হয়। প্রথমে খালের মোহনার জায়গা দখল করে বানানো একটি আধপাকা ও একটি পাকা স্থাপনা ভাঙা হয়। এরপর শুরু হয় খালের পাড়ে নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবন ভাঙার কাজ। ডিএনসিসির সম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, নির্মাণাধীন ভবনটির ৭০ ভাগই খালের জায়গার ওপর বানানো হয়েছে। মেয়রের উপস্থিতিতে এই উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ডিএনসিসি অঞ্চল-৫-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বির আহমেদ। উচ্ছেদ অভিযানের পাশাপাশি বিডি ক্লিনের স্বেচ্ছাসেবী ও ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের খাল পরিষ্কারের কাজ চলতে থাকে। ডিএনসিসির কর্মকর্তারা জানান, লাউতলা খালের তিন কিলোমিটার অংশের পরিষ্কারের কাজ করা হবে।