বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লানার্স (বিআইপি) এর উদ্যোগে বিশ্ব নগর পরিকল্পনা দিবস ২০২৩ উপলক্ষ্যে আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফাইনাল আজ (২৯ ডিসেম্বর, ২০২৩, শুক্রবার) অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকার প্লানার্স টাওয়ারে অনুষ্ঠিত এই গ্র্যান্ড ফাইনাল প্রতিযোগিতাটির প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লানার্স (বিআইপি) এর সভাপতি পরিকল্পনাবিদ ফজলে রেজা সুমন। আরো বক্তব্য রাখেন বিআইপি’র সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা জনাব মোঃ আব্দুল মাজেদ প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, নাগরিক সুবিধা বিবেচনায় ভূমির মিশ্র ব্যবহার করা হলেও ভূমির অতিমিশ্র ব্যবহার ঢাকা শহরকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলছে। যে কোন পরিকল্পিত নগর ব্যবস্থাপনায় মাস্টারপ্লান অনুযায়ী জনসংখ্যার ঘনত্ব বিবেচনা ও এলাকার আয়তন অনুসারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধমীর্য় উপাসনালয়, কাঁচাবাজার থাকতে পারে। কিন্তু বর্তমান সমস্যা হচ্ছে ভূমির অতিমিশ্র ব্যবহার ঢাকা শহরের বসবাসের উপযোগিতা নষ্ট করছে। যেখানে সেখানে গড়ে উঠেছে অননুমোদিত স্কুল—কলেজ, বাজার, দোকান পাট। আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে বাণিজ্যিক অফিসসহ শিল্প—কারখানা। পুরান ঢাকায় গেলেই দেখা যাবে জনস্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর অনেক কারখানা সেখানে পরিচালিত হচ্ছে। ঢাকা শহরের বুকে তেজগাঁও শিল্প এলাকার ব্যবহার কি হবে তা নিয়ে নতুনভাবে পরিকল্পনা করা দরকার। এই শহরের বাসযোগ্যতা পুনরুদ্ধারে সরকারের পাশাপাশি নাগরিকদেরও সচেতন হতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে আমলাতন্ত্রই বড় বাধা।
ঢাকা শহরের আশেপাশে যেভাবে অননুমোদিত হাউজিং কোম্পানী খাল—বিল, ডোবা—নালা, ধানী জমি ভরাট করে রাজউকের অনুমোদন ব্যতিরেকে হাউজিং প্রকল্প গড়ে তুলছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী। সাধারণ মানুষ প্রতারিত হয়ে চটকদার বিজ্ঞাপণ দেখে ঝুঁকিপূর্ণ এসব জমি কিনছে। অদূর ভবিষ্যতে এইসকল আবাসন প্রকল্পে ভূমিকম্পসহ যে কোন দুর্যোগে ব্যুপক ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে।

মিশ্র ভূমি ব্যবহার—ই ঢাকা শহরের বাসযোগ্যতা পুনরুদ্ধারের প্রধান অন্তরায় শীর্ষক বিতর্ক প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফাইনালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিকদের পরাজিত করে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিকরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। বিতর্ক প্রতিযোগিতায় দেশের স্বনামধন্য ৭টি বিশ্ববিদ্যায়ের বিতার্কিকরা অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকরী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হচ্ছে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট), খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।