মানিকগঞ্জে লাইসেন্স বিহীন ন্বপ্ন হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনেষ্টিক সেন্টারে ডা: খাইরুলের ভুল অপারেশনের কারনে প্রসূতী মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। অপারেশনের পরে অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণ হয়ে রোগীর মৃত্যু হয় বলে জানান তার পরিবার। এ ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছে ডা: খাইরুল হাসান। জানা যায়, এই হাসপাতালে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি,ডাক্তার, নার্স ও ঔষুধ না থাকায় সঠিক চিকিৎসা দিতে না পারার কারনে ঘটে প্রসূতী মায়ের মৃত্যু। স্বপ্ন হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার লাইসেন্সের জন্য অনলাইনে আবেদন করেই প্রতিষ্ঠানটি অস্ত্রোপচার, চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ সকল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। মাদকদ্রব্য,পরিবেশ ও ফায়ার সার্ভিস এর লাইসেন্সের জন্য সদ্য অনলাইনে আবেদন করে লাইসেন্স হাতে না পেয়েই ব্যবসার উদ্দেশে সেবার নামে পুরোদমে ভুক্তভোগিদের পকেট কাটছে হাসপাতাল কতৃপক্ষ। গত, ২৯ অক্টোবর ঘিওর উপজেলার শ্রীবাড়ি এলাকার মো:উজ্জল হোসেনের স্ত্রী লিপি আক্তারকে প্রসব জনিত কারনে ভর্তি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালে ডক্তার না থাকায় কারনে ডা: খায়রুলকে ডেকে নিয়ে সিজার করান। কিন্তু ডা: খাইরুলের ভুল চিকিৎসায় রুগীর অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরন হতে থাকে। রোগীর অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বেলা তিনটার দিকে মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে হাসপাতালে যাওয়ার পথেই মারা যান লিপি আক্তার। ডা: খাইরুলের ভূল চিকিৎসা ও লাইসেন্স বিহীন হাসপাতাল নিয়ে একাধিক গনমাধ্যমে সংবাদটি প্রচার হলে শহরজুরে আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়। লিপি আক্তারের ভাই মো. রাজিব মিয়া জানান, অপারেশনের পর থেকেই আমার বোনের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। আমার বোনের ফাইলপত্র চাইলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেগুলো দেয়নি। আমি বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চাইলেও তারা কোন উত্তর দেয়নি। নিক্কন তার বক্তব্যে বলেন, আমি মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট কোসে তৃতীয় বর্ষে লেখাপড়া করছি। অপারেশেনরে সময় আমিও ছিলাম। অপারেশনের পর যখন রক্ত ক্ষরন বন্ধ হচ্ছিল না তখন খাইরুল স্যারকে খবর দেই। স্যার তিনবার এসে দেখেছেন এবং চিকিৎসা দেন। এরপর রোগীর অবস্থা খারাপ হলে তাকে মুন্নু মেডিকেলে রেফার্ড করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক নির্দেশনা থাকে যে, লাইসেন্সবিহীন কোন ক্লিনিক ও হাসপাতালে কোন ডাক্তার কোন ধরনের অপারেশন করতে পারবে না এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও অফিস খুলতে পারবে না। সেই নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ডা: খাইরুল চালিয়ে যাচ্ছে চিকিৎসা কর্যক্রম। এ যেন দেখার কেউ নেই। ইতিপূর্বেও ভূল অপারেশনের কারনে রোগীর মৃত্যু হওয়ায় ডা: খাইরুল হাসানকে নিষেধাজ্ঞা অরোপ করেছিল কর্তৃপক্ষ। অদৃশ্য কারনেই আবার সে সার্জারি কার্যক্রম শুরু করেন। লিপি আক্তারের চাচাতো ভাই শরিফুল ইসলাম জানান, সিজার অপারেশন করার জন্য তার বোন লিপি আক্তারকে সকাল ১০টার দিকে স্বপ্ন হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনেস্টিক সেন্টারে ভর্তি করে। এরপর দেড়টার দিকে ডাক্তার খাইরুল হাসানের তত্বাবধানে অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পর থেকে ডাক্তাররা বার বার অপারেশন থিয়েটারে যাওয়া আসা করতে থাকে। এরপর রোগীর অবস্থা জানতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায় রোগীর অবস্থা একটু খারাপ হয়ে গেছে। ভালো কোন হাসপাতালে নিয়ে গেলে ঠিক হয়ে যাবে। রোগীর অবস্থার অবনতি হলে তাকে দ্রুত মুন্নু মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যেতে বললে আমরা অ্যাম্বুলেস্নে করে মুন্নু মেডিকেলে নিয়ে যেতে চাই। কিন্তু মুন্নু মেডিকেলে পৌঁছানোর আগেই আমার বোন মারা যায়। এ বিষয়ে ডা: খাইরুলের সাথে মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা: মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী বলেন, বিষয়টি নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।