এই বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত আট মাসে আত্মহত্যা করেছে ৩৬১ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ১৬৯ জনই স্কুল শিক্ষার্থী বলে জানিয়েছে আঁচল ফাউন্ডেশন।
আজ শনিবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহননের হার ক্রমবর্ধমান।
ফাউন্ডেশন জানায়, গত আট মাসে ১৬৯ জন স্কুল শিক্ষার্থী, ৯৬ জন কলেজ শিক্ষার্থী, ৬৬ জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী এবং ৩০ জন মাদ্রাসা শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে।
দেশের ১০৫টি জাতীয় পত্রিকা, স্থানীয় পত্রিকা এবং অনলাইন পোর্টাল থেকে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার তথ্য সংগ্রহ করা হয় বলে জানিয়েছে ফাউন্ডেশন।
২০২২ সালের এই সময়ে ৩৬৪ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি, ইন্টেলিজেন্স প্ল্যানিং এন্ড রিসার্চ ফরিদা ইয়াসমিন, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দীন আহমদ, আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তানসেন রোজসহ অনেকে।
উক্ত তথ্যে দেখা যায়, ২০২৩ সালের প্রথম আট মাসে ৩৬১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫৯.৩০ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী গত আট মাসে আত্মহত্যা করেছে। কারণ বিবেচনায় দেখা যায় অভিমান, প্রেমঘটিত, পারিবারিক বিবাদ যৌন হয়রানির ঘটনায় এবং পড়াশোনার চাপ ও ব্যর্থতার কারণে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যা করেছে স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা। মোট আত্মহত্যাকারী শিক্ষার্থীদের ৪৬.৮ শতাংশই স্কুল শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে মেয়ে শিক্ষার্থী ১১২ জন আর ছেলে ৫৭ জন। এছাড়া আত্মহননকারীদের মধ্যে মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ৮ দশমিক ৩১ শতাংশ।
আঁচল ফাউন্ডেশন জানায়, আত্মহত্যাকারীদের বয়স ভিত্তিক বিবেচনায় দেখা যায় সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যা করেছেন ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা। ১ থেকে ১২ বছরের শিক্ষার্থী ছিল ৮.৩০ শতাংশ।
শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে গবেষকেরা দেখেছেন সবচেয়ে বেশি দায়ী অভিমান। অভিমানের কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে ৩১ দশমিক ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে নারী শিক্ষার্থী ৫৭ জন এবং সম সংখ্যক পুরুষ শিক্ষার্থী রয়েছেন।
গত ৮ মাসে সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। এ বিভাগে আত্মহত্যা করেছে ৩১.৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী। এরপর যথাক্রমে রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ (১৪.১০ শতাংশ), খুলনা বিভাগ (১৩ শতাংশ), রাজশাহী (১১.৯০ শতাংশ), ময়মনসিংহ (১০ শতাংশ), রংপুর (৮.৯০ শতাংশ), বরিশাল (৮.৩০ শতাংশ) ও সিলেট বিভাগে ২.৫ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ঢাকা শহরে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা ও বেড়ে উঠার সহায়ক পরিবেশ না থাকায় এখানে আত্মহত্যার ঘটনা বেশি ঘটছে।