প্রতিনিয়ত নির্বাচন অফিসের সামনে বারান্দায়, চায়ের দোকান কিংবা অফিসের কর্মচারীদের রুমে বসে চলতো জাতীয় পরিচয় পত্র (এনআইডি) সংশোধনের নামে দালালী। দালালরা যেনো রীতিমতো পেশা হিসেবে নিয়েছিল সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাচন অফিসে। সমস্যার আকার ভেদে হতো টাকার অঙ্কের দাম কশাকশি। একাধিকবার সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছিল সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাচন অফিস ও অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। পরবর্তীতে গত বছর দূর্নীতি ও ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে সংবাদ প্রচারের পর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় সাবেক উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শেখ ফরিদের বিরুদ্ধে। এরপর তাকে বদলি করা হয় সোনাইমুড়ী থেকে। নতুন নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বর্তমান সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আহসান হাবীব। তার যোগদানের পরপরই দৃশ্যপট বদলে যায় সোনাইমুড়ী উপজেলার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পেইজ খুলে এবং অফিসের সামনে বিভিন্ন পোস্টার লাগিয়ে সাধারণ মানুষকে দালাল না ধরতে ও ঘুষ বাণিজ্য না করতে নানা ভাবে সচেতন করেন তিনি। জানা যায়,নির্বাচন অফিসের একাধিক কর্মচারীকেও নানান সময় উৎকোচ গ্রহণে উদ্বুদ্ধ ও দালালদের সাথে আঁতাত রাখায় সচেতন করেন তিনি। এরইমধ্যে উপজেলা নির্বাচন অফিস দালাল মুক্ত হয়েছে বলে জানা যায়। এদিকে সাধারণ মানুষ তাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। হয়রানি না হয়ে কাঙ্ক্ষিত সেবা পেয়ে খুশি সেবা প্রার্থীরা। গত রমজান মাসে জাল সার্টিফিকেট দিয়ে ভুয়া সংশোধন করতে আসলে দালালসহ একজনকে পুলিশে সোপর্দ করেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো.আহসান হাবীব। গত কিছুদিন পূর্বে উপজেলার নদনা ইউনিয়নের হাটগাঁও গ্রামের নুরুল আলম রিপন নামের এক দালাল পাশ্ববর্তী জয়াগ ইউনিয়নের মাহুতলা গ্রামের মাও. আজিজুল হকের কাছ থেকে তার এনআইডি কার্ডের নাম সংশোধনের কথা বলে ১৮হাজার টাকা উৎকোচ গ্রহণ করে। পরবর্তীতে নির্বাচন কর্মকর্তা সরেজমিনে তদন্তে গেলে ভুক্তভোগী মাও.আজিজুল হক রিপনকে টাকা দেওয়ার বিষয়টি খুলে বলেন। পরবর্তীতে গতকাল রিপন ফের আরেকটি এনআইডির দালালী করতে এলে নির্বাচন কর্মকর্তা তাকে ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদের উপস্থিতিতে হাতেনাতে ধরে। পরে তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে মুচলেকা দিয়ে চেয়ারম্যানের কাছে সোপর্দ করা হয় তাকে। দালাল মুক্ত সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাচন অফিসে সেবা প্রার্থীরা কাঙ্ক্ষিত সেবা পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। দালাল না ধরে ও ঘুষ লেনদেন না করে সবাইকে সরাসরি সঠিক কাগজপত্র নিয়ে নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে এসে সঠিক নেবা নিতে আহ্বান জানান সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.আহসান হাবীব।