মশার প্রজাতি নির্ণয় ও আচরণ গবেষণা করে সে অনুযায়ী ওষুধ প্রয়োগ করতে চান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। পাশাপাশি মশক নিধনে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর গুলশান-২ এ নগর ভবনে হল রুমে মশক নিধনে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন সংক্রান্ত এক সভায় তিনি এ কথা জানান।
গত জানুয়ারিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আয়োজনে দেশটির ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের কমার্শিয়াল ল ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রামের (সিএলডিপি) আমন্ত্রণ ও অর্থায়নে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধি দল ফ্লোরিডা সফর করে। যুক্তরাষ্ট্র সফরের অভিজ্ঞতায় মশক নিধনে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রয়োজনীয় কর্মপরিকল্পনা বা স্ট্যান্ডার্ড অপারেশন প্রসিডিউর (এসওপি) প্রণয়নের সিদ্ধান্ত হয়।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন পদক্ষেপের পাশাপাশি মশক নিধনে সর্বস্তরের মানুষের সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি। যুক্তরাষ্ট্রের মতো আমাদের দেশেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সোসাইটিগুলোকে সচেতনতা কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রে ‘মসকিউটস বাইটস আর ব্যাড’— শিরোনামে একটি পাঠ্যবই রয়েছে। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বইটি পড়ানো হয়। শিক্ষার্থীরা কার্টুন আকারে রং করে বইয়ের বিষয়বস্তু অধ্যয়ন ও অনুশীলন করে। আমাদের স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্যও পাঠ্যপুস্তকে ও কার্টুন আকারে এ বিষয়ে শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। মশক নিধনে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে চাই।
মিয়ামির অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, আমরা বছরের ৩৬৫ দিনই সব এলাকায় একই ওষুধ একই মাত্রায় ছিটাই। কিন্তু মিয়ামিতে আগে মশার প্রজাতি নির্ণয় করা হয়। তারপর ওষুধ প্রয়োগের সিদ্ধান্ত হয়। তাই আমাদের কাজ হবে ল্যাবে মশার প্রজাতি নির্ণয় ও আচরণ গবেষণা করে ওষুধ প্রয়োগ করা। ল্যাব স্থাপন করা যেহেতু সময় সাপেক্ষ বিষয় তাই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে আমরা দ্রুত কার্যক্রম শুরু করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে পর্যাপ্ত কীটতত্ত্ববিদ নেই। পুরো বাংলাদেশে মাত্র বিশজন কীটতত্ত্ববিদ কাজ করছেন, এটা খুবই অপর্যাপ্ত। আমাদের আরও কীটতত্ত্ববিদ বাড়াতে হবে। ডিএনসিসিতেও আমরা একটি শক্তিশালী দক্ষ কীটতত্ত্ববিদদের টিম গঠন করবো। মশা নিয়ন্ত্রণে গবেষণা করেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
এসময় তিন মাস অন্তর অন্তর মশক নিধন কার্যক্রমের তথ্য সম্বলিত জার্নাল প্রকাশের নির্দেশনাও দেন আতিকুল ইসলাম।
সভায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মশক নিধন কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। ডিএনসিসি মেয়রের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার ডিএনসিসি আওতাধীন এলাকায় মশক নিধন কার্যক্রমে তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।
এসময় ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, ডিএনসিসি মেয়রের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।