বগুড়ার এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম, চাঁদাবাজি কমলেও এখনও ভাঙেনি বাজার সিন্ডিকেট। নানা ছুতোয় প্রতিদিনই বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। আর বাজার নিয়ন্ত্রণে আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। আর সাধারণ ক্রেতারা দিন গুনে যাচ্ছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমে যাওয়ার আশায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাম্প্রতিক বন্যা ও টানা বৃষ্টি কৃত্তিম সংকটের কারণেই এই অবস্থা। তবে শিগগিরই এই অবস্থা থেকে মুক্তি মিলবে, সব কিছুই হবে স্বাভাবিক। সবজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা প্রতি কেজিতে , চালে বেড়েছে ৩ থেকে ৫ টাকা পতি কেজিতে, মুরগির মাংসতে বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা পতি কেজিতে, মাছের বাজারেও বেড়েছে ২০ থেকে ৪০ টাকা প্রতি কেজিতে, ডিমের প্রতি হালিতে বেড়েছে ৮ থেকে ১০ টাকা। গতকাল শনিবার ৫ অক্টোবর বগুড়া শহরের, ফতেহ আলী, রাজা বাজার বকশি বাজার,ও কলোনি বাজারে সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে। কাঁচামরিচ ১৯০ টাকা কেজি থেকে বেড়ে ২৪০ থেকে ২৭০ টাকা, বেগুনের কেজিতে দাম বেড়ে ৬০ থেকে ১০০টাকা, করলা ও কচুমুখির কেজি ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা, পটল, চিচিংগা ও ঢেড়সের কেজি ৫০ টাকা, শশার কেজিতে দাম বেড়ে ৫০ টাকা কেজি, মিষ্টিলাউয়ের কেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপেঁর কেজি ২০ থেকে ৩৫ টাকা। আদার কেজি মানভেদে ২৯০ এবং রসুন মানভেদে ২৩০ থেকে ২৪৫ টাকা কেজিতে আলু মান ভেদে আগের দাম ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা কেজি, দেশি পেঁয়াজ ১১৫ টাকা প্রতি কেজি ,আমদানিকৃত ভারতীয় পেঁয়াজ ১০৫ টাকা, মুরগির ডিম প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা। হাঁসের ডিম ৭২ টাকা হালি ও কোয়েল পাখির ডিম ১৪টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে। এদিকে চালের বাজার ঘুরেও দেখা গেছে, মোটা ও মাঝারি মানের চালও দাম বেড়েছে ।স্থানীয় মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৭১ টাকা কেজি যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৬৮ টাকা। নাজির শাইল বিক্রি হচ্ছে ৮১ টাকা কেজি যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৭৭ টাকা কেজি। বিআর-২৮ বিক্রি হচ্ছে ৫৯ থেকে ৬১ টাকা কেজি যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৫৫ থেকে ৫৭ টাকা কেজি। বিআর-৪৯ বিক্রি হচ্ছে ৬১ টাকা যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৫৭ টাকা। স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকা কেজি যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৫৫ টাকা। কাটারি চাল ৭০ টাকা কেজি যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৬৬ টাকা কেজি। পাইজাম চাল বিক্রি হচ্ছে ৭২ টাকা কেজি যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৭০ টাকা কেজি। এদিকে মাছ-মাংসর বাজার ঘুরেও দেখা গেছে ব্রয়লার মুরগির কেজিতে বেড়েছে ১৫ টাকা এখন প্রতি কেজি ১৮০ টাকা, সোনালী মুরগির কেজি ২৪০ টাকা গত সপ্তাহে ছিল ২২০ টাকা । গরুর মাংসের কেজি ৭০০ টাকা।খাসির মাংস এক হাজার টাকা। আড়াই থেকে তিন কেজি ওজনের রুই মাছ প্রতি কেজি ৩১০ থেকে ৩৪০ টাকা, চার কেজি ওজনের কাতল মাছ ৩৮০ টাকা, তিন কেজি ওজনের সিলভার কার্প মাছ ২৮০টাকা কেজিতে, ইলিশের সরবরাহ আগের চেয়ে কিছুটা বাড়লেও দামও বেশ চড়া। এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ মাছ এক হাজার ৭০০ থেকে এক হাজার ৮০০’ টাকা কেজি, আর ২৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশগুলো ৬৯০ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজার গুলোর বিক্রেতারা জানান, কৃত্রিম সংকটের কারণে টানা বৃষ্টি ও বন্যার কারণেই চাহিদা মত কোন জিনিস পাওয়া যাচ্ছে না তাই প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেড়েছে আগামীতে দাম আরও বাড়তে পারে। রাজা বাজারে বাজার করতে আসা আব্দুল হালিম বলেন , আশায় ছিলাম নতুনভাবে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর নৃত্যপুর্ণের দাম কমে যাবে কিন্তু কমার চেয়ে বেড়েছে প্রত্যেকটা জিনিসের দাম। দেশটা স্বাধীন হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না, যতদিন যাচ্ছে ততোই বাড়ছে সবজি চাল ডাল আটা মাছ মাংস ডিমের দাম। এভাবে বাজারে দাম বাড়তি থাকলে আমাদের মত ,নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের জন্য সংসার চালানো কষ্ট সাধ্য হয়ে যাবে। বগুড়া চাল কল মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল হামিদ জানায়,ধান চালের কোন সংকট নাই,আড়তেও দাম বাড়ানো হয়নি। খুচরা বিক্রেতারা তাদের ইচ্ছে মতো দাম বাড়াচ্ছে। বগুড়া ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই আমরা বাজার তদারকি করে আসছি। কেউ যদি কৃত্রিম সংকট তৈরি করে মূল্যবৃদ্ধি করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।