দুপুর গড়িয়ে বিকেলেও উত্তরের জেলা দিনাজপুরের খানসামায় দেখা মিলছে না সূর্যের। পুরো দেশে শীতের প্রভাব বেশি পরে এই অঞ্চলে, সকাল-সন্ধ্যায় কুয়াশায় চারপাশ ঢাকা।

শীতে জুবুথুবু প্রাণ-প্রকৃতি। শীতের এমন প্রকোপে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে ডায়রিয়া ও ঠাণ্ডা জনিত রোগ।

শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জ্বর-সর্দি, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা নিতে প্রতিদিনই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (পাকেরহাট) হাসপাতালে ভিড় করছেন আক্রান্তরা। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিশু ও বয়স্করা।

শিশু ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীর চিত্র ধারণ ক্ষমতারও ২-৩ গুণ বেশি। এর মধ্যে সপ্তাহ জুড়ে প্রতিদিন রোগী ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে।

তাদের অধিকাংশই শিশু রোগী। বহিঃবিভাগে প্রতিদিন ৫শ থেকে ৭শ জন চিকিৎসা নেওয়াদের মধ্যেও শীত ও ভাইরাস জনিত রোগী বেশি। গত কয়েক দিনে ডায়রিয়া ও ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শামসুদ্দোহা মুকুল।

বুধবার (১০ জানুয়ারি) হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, বেডে শয্যায়িত বেশির ভাগ রোগী ঠাণ্ডা ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যা বেশি। অতিরিক্ত রোগীর চিকিৎসা দিতে মাঝেমধ্যে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক-নার্সদের। তাদের বেশির ভাগই নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছেন বলে জানান কর্তব্যরত সেবিকা।

চিকিৎসার জন্য আসা রোগীর স্বজনরা বলছেন, শতশত মানুষ প্রতিদিন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসে। ঠাণ্ডা ও ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে এলে চিকিৎসক ভর্তি দিচ্ছেন।

বহিঃবিভাগে চিকিৎসা নিতে থেকে আসা চঞ্চলা অধিকারী নামে এক শিশু রোগীর মা বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ছেলে, ভাজতি জ্বর সর্দি রোগে আক্রান্ত। তাই তাদেরকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে এসেছি। এই ঠাণ্ডায় বেশ কষ্ট হচ্ছে তাদের।

চিকিৎসা নিতে আসা আরেক রোগী জানান, আমি বেশ কয়েকদিন ধরে শ্বাসকষ্টে ভুগছি। তাই বাধ্য হয়ে হাসপাতালে এসেছি চিকিৎসা নিতে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শামসুদ্দোহা মুকুল জানান, শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডায়রিয়া, ঠাণ্ডাজনিত ও শ্বাসকষ্ট রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়। উত্তরের অঞ্চলে খুব বেশি শীত পরে, তাই সাবধানে থাকতে হবে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধার বেলা নজর রাখতে হবে। কোনভাবেই ঠান্ডা লাগানো যাবে না। তিনি আরো বলেন, এ সময় খেজুরের রস খাওয়ার ধুম পরে যায়। এ রসে নিপা ভাইরাস রয়েছে। আমরা অনেকেই না জেনেই এসব রস খেয়ে থাকি। আর যদি একান্তই খেতে হয় অবশ্যই ফুটিয়ে পান করতে হবে।

ছবির ক্যাপশন: ১.দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (পাকেরহাট) এ ঠাণ্ডাজনিত রোগীরা বেডে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ২.দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (পাকেরহাট)।