চুয়াডাঙ্গায় ভয়াবহ আকারে বাড়ছে নিউমোনিয়া ও আবহাওয়াজনিত শিশু রোগীর সংখ্যা। গত ৮ দিনে ভর্তি হয়েছে ৪০৪ জন শিশু রোগী।তিল পরিমান জায়গা নেই হাসপাতালে। হাসপাতালের বেড, ফ্লোর, বারান্দা এমনকি হাসপাতালের কলাপসিবল গেট পর্যন্ত রোগীর লম্বা লাইন। চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। চুয়াডাঙ্গায় আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। এরমধ্যে দিন দিন বেড়েই চলেছে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু রোগীদের সংখ্যা। এতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে প্রতিদিন ভর্তি হচ্ছে শিশুরা। তিল পরিমান জায়গা নেই ওয়ার্ডে। অন্যদিকে রোগির চাপ রয়েছে বহিঃবিভাগেও। বহির্বিভাগে প্রতিদিন জ্বর, ঠান্ডা, কাশিতে আক্রাক্ত হয়ে ৫০০-১০০০ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসকেরা বলছেন, অভিভাবকদের সচেতনতা আরো বাড়াতে হবে। চিন্তার কোনো কারণ নেই। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড সুত্রে জানা গেছে, গত ৮ দিনে অর্থাৎ ৭ অক্টোবর থেকে ১৪ অক্টোবর রাত সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত শিশু ওয়ার্ডের মোট ভর্তি হয়েছে ৪০৪ শিশু রোগী। এরমধ্যে ৫০ শতাংশই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। সকাল ও রাতে সদর হাসপাতালের পুরানো ভবন ঘুরে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডে তিল পরিমান পা ফেলার জায়গা নেই। এমনকি পুরানো ভবনের কপালসিবল গেট পর্যন্ত পাটি বিছিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে শিশু রোগীরা৷ একদিকে শিশু রোগীদের যেমন চাপ, তেমনই লোকবল সঙ্কটের কারণে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে নার্স ও চিকিৎসকরা৷ তবে নার্সদের অক্লান্ত পরিশ্রমে রোগীরা সন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। শিশু ওয়ার্ডের একজন নার্স বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে এবার শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে অতিরিক্ত হারে। পা ফেলার জায়গা নেই। একদিকে লোকবল সঙ্কট অপরদিকে রোগীদের চাপ সামলাতে প্রচুর বেগ পেতে হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গার গাড়াবাড়িয়া গ্রামের বেল্টু নামে এক ব্যক্তি বলেন, হঠাৎ করেই আমার ছেলের প্রচণ্ড জ্বর ও ঠান্ডায় আক্রান্ত হয়। বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসা করেও কম না হলে হাসপাতালে নিয়েছি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ছেলে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, আগের তুলনায় চিকিৎসা সেবা ভালো হয়েছে। বাচ্চাদের কোনো সমস্যা হলে নার্সের ডাকার সঙ্গে সঙ্গেই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসককে জানানো হলে তিনিও তাৎক্ষণিক এসে চিকিৎসা দিচ্ছেন। ইখলাস নামে এক ব্যক্তি বলেন, আমার নাতী জ্বর ঠান্ডায় আক্রান্ত হয়। অবস্থা বেগতিক হলে রাতে ভর্তি করি। এখানে কোন জায়গা নেই ওয়ার্ডে। নাতীকে নিয়ে মেঝেই চিকিৎসা দিচ্ছি। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মাহবুবুর রহমান মিলন বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে সদর হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে৷ এরমধ্যে ৫০ শতাংশই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। এ সময় বাচ্চাদের সতর্ক রাখতে হবে। তিনি বলেন, বাচ্চাদের বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হবে। ৬ মাসের বড় বাচ্চাদের অন্যান্য খাবার দিতে হবে। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ বৃদ্ধি পায়। এতেই শিশুদের যত্ন বা সচেতন না হলে তাদের বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের ঝুকি থাকে।