ফেনীতে সর্বজনীন পেনশন স্কিম জেলা পর্যায়ে সুষ্ঠু ও সফলভাবে বাস্তবায়ন সংক্রান্ত সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৯ এপ্রিল সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার এর সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( সার্বিক) অভিষেক দাশের উপস্থাপনায় আলোচনা করেন, ফেনী ১ আসনের সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, ফেনী ২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খায়রুল বশর মজুমদার তপন, পুলিশ সুপার জাকির হাসান, ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল, দাগনভূঁইয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন, সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন, সোনাগাজী পৌর সভার মেয়র এডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন, স্থানীয় সরকার ফেনীর উপ-পরিচালক গোলাম মোঃ বাতেন, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ হুমায়ুন রশীদ, ছাগলনাইয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাইফুল ইসলাম কমল, ফেনী প্রেস ক্লাবের প্রতিনিধি সাংবাদিক বক্তিয়ার ইসলাম মুন্না, এমএ সাঈদ খান, দিলদার হোসেন স্বপন, যতন মজুমদার, স্টার লাইন গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান জাফর উদ্দিন, নারী সমাজ কর্মী মঞ্জিলা মিমি সহ জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। সেমিনারে মাধ্যমে জানানো হয়, ৬০ বছর বয়সের পর থেকে সকল মানুষকে পেনশনের আওতায় আনতে বিভিন্ন স্কিম চালু করেছেন সরকার। টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ১৭ আগস্ট মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বজনীন পেনশন স্কিম উদ্বোধন করেন। সমতা স্কিমঃ দারিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী স্বল্প আয়ের নাগরিকগণ যাদের বার্ষিক আয় অনুর্ধ্ব ৬০ হাজার টাকা তাদের জন্য ‘সমতা’ স্কিম। ‘সমতা’ স্কিমে মাসিক চাঁদার হার ১০০০ (এক হাজার টাকা, যার মধ্যে চাঁদাদাতার জমার পরিমাণ ৫০০ (পাঁচশত) টাকা এবং বাকি ৫০০ (পাঁচশত) টাকা সরকার প্রদান করবেন। প্রবাস স্কিমঃ বিদেশে কর্মরত বা অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিক চাঁদার অর্থ বৈদেশিক মুদ্রায় বা বাংলাদেশে তিনি যে ব্যাংক একাউন্টে রেমিটেন্স প্রেরণ করেন, সে একাউন্ট হতে জমা প্রদান করে এ স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। পেনশন স্কিমের মেয়াদ শেষে দেশীয় মুদ্রায় পেনশন দেওয়া হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে পাসপোর্টের তথ্য দিয়ে নিবন্ধন করতে পারবেন। বেসরকারি স্কিমঃ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিক ও কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য এ সুবিধা। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অথবা নিজ উদ্যোগে এককভাবে এ স্কিমে যুক্ত হওয়া যাবে। প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্কিমে যোগ দিলে মাসিক জমার ৫০ শতাংশ কর্মকর্তা/কর্মচারী এবং বাকি অংশ প্রতিষ্ঠান দিবে। কৃষক শ্রমিক জেলে তাঁতী পেনশন স্কিমঃ স্বকর্মে নিয়োজিত নাগরিকদের জন্য এ স্কিম। কৃষক, রিকশাচালক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতি, ব্যবসায়ী, গৃহিণীসহ সব অনানুষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত ব্যক্তিগণ নির্ধারিত হারে চাঁদা প্রদান করে এ স্কিমে যুক্ত হতে পারবেন। সর্বজনীন পেনশন স্কিমের বৈশিষ্ট্য সমুহঃ সর্বজনীন পেনশন স্কিমে ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সকল বাংলাদেশি নাগরিক অংশ নিতে পারবেন। তবে, বিশেষ বিবেচনায় পঞ্চাশোর্ধ্ব নাগরিকগণও ১০ বছর নিরবচ্ছিন্ন জমা প্রদান করলে আজীবন পেনশন সুবিধা পাবেন। জাতীয় পরিচয় পত্রের (ঘওউ) ভিত্তিক অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করা হলে আবেদনকারীর অনুকূলে একটি ইউনিট পেনশনার আইডি প্রদান করা হবে। ঘওউ না থাকলেও পাসপোর্ট নাম্বার ব্যবহার করে প্রবাস স্কিমে রেজিস্ট্রেশন করা যাবে। দেশে অবস্থানরত আবেদনকারীর মোবাইল নম্বর ও প্রবাসীদের ইমেইলের মাধ্যমে ইউনিক আইডি নম্বর, ঙঞচ, জমার পরিমাণ এবং মাসিক জমা প্রদানের তারিখ অবহিত করা হবে। প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিকগণ তাঁর পরিবারের ১৮ বা তদুর্ধ্ব এক বা একাধিক সদস্যের (যেমন-স্বামী, স্ত্রী, বাবা, মা, ভাই, বোন) নামে উক্ত ব্যক্তির জন্য প্রযোজ্য স্কিমে নিবন্ধন করে মাসিক চাঁদা প্রদান করতে পারবেন। প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকগণ ঈৎবফরঃ পধৎফ, ফবনরঃ পধৎফ, এক্সচেঞ্জ হাউজ ও ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রায় বা বাংলাদেশে তিনি যে ব্যাংক একাউন্টে রেমিটেন্স প্রেরণ করেন, সে একাউন্ট হতে মাসিক চাঁদার টাকা কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবে জমা করতে পারবেন। অন্যান্য স্কিমে মাসিক জমা নির্ধারিত ব্যাংকের কাউন্টারে সরাসরি, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সাভির্স, অনলাইন ব্যাংকিং, ব্যাংক একাউন্ট হতে অটো ডেবিট অথবা ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে দেওয়া যাবে। সর্বজনীন পেনশন স্কিমে প্রদত্ত জমার বিপরীতে বিনিয়োগ কর রেয়াত পাওয়া যাবে এবং মাসিক পেনশন আয়কর মুক্ত থাকবে। মাসিক পেনশনের টাকা পেনশনারের ব্যাংক একাউন্টে বা মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সাভির্স একাউন্টে (যেমনঃ বিকাশ, নগদ ইত্যাদি) স্বয়ংক্রিয়ভাবে জমা হবে। পেনশনযোগ্য বয়সে উপনীত হলে চাঁদাদাতা আজীবন পেনশন ভোগ করবেন। চাঁদাদাতা পেনশনযোগ্য বয়সে উপনীত হওয়ার পূর্বে মৃত্যুবরণ করলে জমাকৃত অর্থ মুনাফাসহ তাঁর নমিনী/নমিনীগণকে ফেরত দেওয়া হবে। পেনশনার পেনশন ভোগরত অবস্থায় ৭৫ বছরের পাসে মৃত্যুবরণ করলে তার নমিনী/নমিনীগণ পেনশনারের বয়স ৭৫ বছর হাঙ্খার পেনশন প্রাপ্য হবেন। জমার টাকা ট্রেজারি বিল, ট্রেজারি বন্ডসহ কম সময় লাভজনক খাতে বিনিয়োগ করা হবে। পেনশন স্কিম, স্কিমে চাঁদার পরিমাণ ও নমিনি যেকোনো সময় পরিবর্তন করা যাবে। তবে, পেনশনার আইডি অপরিবর্তিত থাকবে।