জমে উঠেছে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণায় মুখর হয়ে উঠছে উপজেলার বিভিন্ন জনপদ। পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে সদর উপজেলা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান। গণসংযোগে ব্যস্তপ্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪ জন প্রার্থী। এরা হলেন, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রিয়াজ উদ্দিন (আনারস), সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য নুরুল ইসলাম সজল (কাপ-পিরিচ), বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান নাসিম রেজা নূর দীপু (মোটর সাইকেল), জেলা যুবলীগের আহবায়ক রাশেদ ইউসুফ জুয়েল (দোয়াত কলম) ও জেলা আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক আহসান হাবীব এহসান (ঘোড়া)। সকল প্রার্থীই নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। ভোটারদের কাছে নানা ধরণের সুযোগ সুবিধার প্রতিশ্রুতি দেয়া হচ্ছে। তবে বর্তমান চেয়ারম্যান এবং রাজশাহী বিভাগের শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান মো. রিয়াজ উদ্দিনের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে বলে কর্মী-সমর্থকরা জানিয়েছেন। প্রতিটি ইউনিয়নের সকল ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে রিয়াজ উদ্দিনের কর্মীবাহিনী রয়েছে, যারা আনারস প্রতিককে বিজয়ী করার জন্য ভোটারদের ঘরে ঘরে যাচ্ছেন। ভোটারদের কাছেও মিলছে বিপুল সাড়া। তারা এবারও রিয়াজ উদ্দিনকেই চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করতে চান বলে জানান আনারসের কর্মী-সমর্থকেরা। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রিয়াজ উদ্দিন ও তার বিশাল কর্মীবাহিনী সদর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মহল্লায় মহল্লায় ভোট প্রার্থনা করছেন। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলাকে ডিজিটাল স্মার্ট উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলা, গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণ, তৃণমূলের মানুষের উন্নয়নে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন। রিয়াজ উদ্দিন জানান, তিনি এবার নির্বাচনে অন্য যে কোন বারের তুলণায় অনেক বেশি সাড়া পাচ্ছেন। জনগণ স্বতস্ফুর্তভাবে তার আনারস প্রতিকের পক্ষে কাজ করছেন। সদর উপজেলায় আনারস প্রতিকের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এবারও তিনি বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মো. রিয়াজ উদ্দিন সদর উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়নের হরিনা গ্রামের সম্ভ্রন্ত মুসলিম পরিবারের সন্তন। ছাত্রজীবনে তিনি পাবনার এডওয়ার্ড কলেজ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৯৮১ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতোকত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি অংশগ্রহণ করেন। জানা যায়, মো. রিয়াজ উদ্দিন রাজনৈতিকভাবে ২০০৭ সালে তৎকালিন সেনা সমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকার কর্তৃক আওয়ামীলীগ সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আটকের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ওই সময় মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশ গ্রহণ, রাজনৈতিক কর্মকান্ড বন্ধের বিরুদ্ধে পাড়া মহল্লায় জনসচেনততা সৃষ্টি ও জনমত গঠনে ভুমিকা রাখেন। দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনী সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন। রিয়াজ উদ্দিন ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ২০১৮ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক এবং বর্তমানে জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন রিয়াজ উদ্দিন। তিনি সফলতার সাথে ৫ বছর উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৮ সালে তিনি রাজশাহী বিভাগের শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যানের পুরস্কার লাভ করেন। প্রাথমিক শিক্ষা ও অন্যান্য উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় তাকে শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান নির্বাচত করা হয়। এছাড়াও একই বছর তিনি সমাজসেবায় শ্রীমতি ইন্দিরাগান্ধী সম্মাননা পদক লাভ করেন। ২০১৯ সালে ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন রিয়াজ উদ্দিন। নির্বাচিত হয়েই পিছিয়ে পড়া এলাকার উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেন। সদর উপজেলার প্িরতটি গ্রামে পাড়ায় ও মহল্লায় বারবার ঘুরে মানুষের সুবিধা-অসুবিধার কথা শুনে সেই মোতাবেক কাজ করেন এই চেয়ারম্যান। ২০২১ সালে তিনি “ডেইরী আইকন-২০২১ ও ২০২২ সালে “সফল মৎস্যচাষী-২০২২, পুরস্কার অর্জন করেন। রিয়াজ উদ্দিন তিন মেয়ে ও এক সন্তানের জনক। তার ছেলেমেয়ে, পূত্রবধু ও জামাতাগণ স্ব স্ব কর্মক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। তার মেয়ে ডা. রাশিদা বিনতে রিয়াজ এমবিবিএস চিকিৎসক। তিনি আশুলিয়ার হ্যাপি জেনারেল হাসপাতালেল চেয়ারম্যান। অপর মেয়ে ডা. রাবেয়া বিনতে রিয়াজ সহকারি সার্জন শহীদ আহসানুল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল টঙ্গী, গাজীপুর। জামাতা মেজর জহিরুল ইসলাম বর্তমানে কুয়েতে শান্তিরক্ষা মিশনে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত। ছেলে প্রকৗশলী ফুয়াদ মো. মঈনুল হক নির্বাহী পরিচালক গ্র্যান্ড জম জম টাওয়ার লিমিটেড উত্তরা ঢাকা এবং পূত্রবধু প্রকৌশলী জান্নাতুল ফেরদৌস সহকারি অধ্যাপক আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ছোট মেয়ে ডা. রাজিয়া সুলতানা আহসানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার। পরিবারের সকল সদস্যই আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত। তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বিজয় হলে সন্ত্রাস চাঁদাবাজি ও মাদক মুক্ত সদর উপজেলা পরিষদ হিসাবে গড়ে তোলার আহ্বান জানান।