বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) জাতীয় জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সার স্ক্রিনিং এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের গবেষণা কক্ষের শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল ৩০ অক্টোবর সোমবার সকাল ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ ব্লকে প্রধান অতিথির হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এ কক্ষের শুভ উদ্বোধন করেন মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। মাননীয় উপাচার্য কেক এবং ফিতা কেটে গবেষণা কক্ষের ফলক উন্মোচন করেন এবং গাইনোকোলজিক্যাল অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. শিরিন আক্তার বেগম এবং অধ্যাপক ডা. জান্নাতুল ফেরদৌস এর পিএইচডির থিসিস প্রটোকলের মোড়ক উন্মোচন করেন। উদ্বোধনকালে মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, জরায়ু-মুখ ক্যান্সার বিশ্বজুড়ে মহিলাদের ক্যান্সারের মধ্যে চতুর্থতম এবং ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর চতুর্থতম শীর্ষ কারণ। এছাড়া, স্তন ক্যান্সার বিশ্বব্যাপী এবং বাংলাদেশে উভয় ক্ষেত্রেই শীর্ষস্থানীয় ক্যান্সার। বাংলাদেশে নারীদের মৃত্যুর প্রধানতম দুটি কারণ হল জরায়ু- মুখ ক্যান্সার ও স্তন ক্যান্সার। অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় রোগের প্রতিকার ও প্রতিরোধ নিয়ে গবেষণা করছে। গাইনোকোলজিক্যাল অনকোলজি বিভাগও অনেক গবেষণা করছে। উদ্বোধিত জাতীয় জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সার স্ক্রিনিং এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের গবেষণা কক্ষ এ গবেষণা কাজ অনেক দূর এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ মনিরুজ্জামান খান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হাফিজুর রহামন, গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক ডা. মোঃ হারিসুল হক, প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. আশরাফুন্নেসা, গাইনোকোলজিক্যাল অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. শিরিন আক্তার বেগম, অধ্যাপক ডা. জান্নাতুল ফেরদৌস, করোস্কোপিস্ট ডা. সাদিয়া মাহবুবা রিপা প্রমুখসহ বিএসএমএমইউ’র অন্যান্য চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও নার্সগণ উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সার স্ক্রিনিং এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র জানায়, বাংলাদেশে প্রতিবছর নতুনভাবে প্রায় ৮,২৬৮ জন মহিলা জরায়ু-মুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় এবং ৪৯৭১ জন মহিলা মারা যায়। একইভাবে বাংলাদেশে প্রতিবছর নতুনভাবে প্রায় ১৩০২৮ জন মহিলা স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় এবং ৬৭৮৩ জন মহিলা মারা যায়। জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর বেঁচে থাকা অনেকাংশে নির্ভর করে, প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় ও কার্যকরী চিকিৎসা প্রদানের উপর। দেরীতে রোগ সনাক্তকরণ হলে সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা দেখা কঠিন বিষয়। এতে মৃত্যু ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই এসব রোগের চিকিৎসা সুবিধা সীমিত ও ব্যয়বহুল। প্রাথমিক পর্যায়ে জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সার সনাক্ত করা গেলে মৃত্যু সংখ্যা কমিয়ে আনা সম্ভব। জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সার স্ক্রীনিং কর্মসূচির আওতায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সিংগাইর, মানিকগঞ্জ, রায়পুরা, নরসিংদী এ এইচপিডি পাইলট প্রোগ্রামসহ বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেলা সদর হাসপাতালে ৩০-৬০ বছর বয়সী মহিলাদের এইচপিভি নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। এই সকল নমুনা নিয়ে গবেষণা করা হবে। যার ফলে বাংলাদেশের মহিলাদের জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সার চিকিৎসার নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে।