বাংলাদেশে মঙ্গলবার ছিলো শারদীয় দুর্গোৎসবের বিজয়া দশমী। দশমীতে বিভিন্ন পুজা মণ্ডপে সকালে পূজা অর্চনা ও ধর্মীয় নানা আচার-অনুষ্ঠান করা হয় । দেয়া হয় দর্পণ বিসর্জন, নারী-পুরুষ ও শিশুরা দেবী দুর্গার আশির্বাদের আশায় বাংলাদেশে মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতিমাকে প্রণাম ও প্রার্থণা করেন। স্বামীর দীর্ঘায়ূ কামনা করে দেবী দুর্গাকে সিঁদুর পরান নারীরা। একে অপরকে সিঁদুর পরিয়ে দেন তারা।

উত্তরা পূর্ব ও পশ্চিম থানার সমন্বয়ে উত্তরাব ১১ নং সেক্টর মাঠে শারদীয় দুর্গোৎসবের বিজয়া দশমী অনুষ্ঠান মহা ধুমধামের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়। সমাপনী দিনে উত্তরা পুজা উদযাপন কমিটির আহবায়ক শ্রী দিলীপ কাজরী, দেশ ও বিশ্বের সব মানুষের মঙ্গল কামনা করে তার বক্তব্য উপস্থাপন করেন পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ ভাবে এবারের পুজা অনুষ্ঠিত হওয়ায় প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে তিনি সাধুবাদ জানান। বিজয়া দশমীর দিনে আরো বক্তব্য রাখেন উত্তরা পূর্ব ও পশ্চিম থানা পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি শ্রী হরিপদ রায়। তিনি তার বক্তব্যে দেশ ও বিশ্বের সব মানুষের মঙ্গল কামনা করেন। সেইসঙ্গে উত্তরায় একটি স্থায়ী পূজা মন্ডপ স্থাপনের জন্য একটি জায়গা বরাদ্দে আবেদন জানান এবং দ্রুত এই বিষয়টি আসু সমাধানে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সমস্যাসহ সকল প্রকার অমঙ্গল থেকে সকল মানুষদের রক্ষায় দেবী দুর্গার কাছে প্রার্থনা করেন । সমাপনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী সদ্বীপ কুমার, শ্রী কমল দে, শম্পা দিদিসহ সংশিষ্ট সদস্যবৃন্দ।

মন্ডপে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে সকাল থেকেই ছিলো বিদায়ের সুর, দেবী দুর্গা মর্ত্য ছেড়ে ফিরে যাবেন স্বামীগৃহ কৈলাসে। দুখঃ কষ্ট আনন্দ অতিক্রম করে আনন্দের সন্ধান চান তারা। তাই মণ্ডপে মণ্ডপে মঙ্গলবার উলুধ্বনি, শঙ্খ, ঘণ্টা আর ঢাকঢোলের বাজনায় ছিলো দেবী দুর্গার বিদায়ের সুর।

বিজয়া দশমীর সকালে ঢাকায় পূজা মণ্ডপগুলোতে শুরু হয় অঞ্জলি দেওয়া। ভক্তরা দলে দলে এসে অঞ্জলি দেন। দেবী দুর্গার বিদায়ের সুরের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সিঁদুর উৎসব। ঢাকায় বিভিন্ন মণ্ডপে সিঁদুর খেলায় মেতেছেন নারীরা। এসময় একে অপরকে লাল রঙ মাখিয়ে সিঁদুর পরিয়ে দিয়েছেন। বিবাহিত নারীরা সীথিতে সিঁদুর পরলেও তরুণীরা মুখে রঙ মেখে আনন্দ করেছেন। বাজে ঢাকের বাদ্য, শঙ্খ আর উলুধ্বনি। মা দুর্গা অশুভ শক্তিকে ধ্বংস করতে এই ধরায় এসেছিলেন।
মঙ্গলবার বিকেলে অশ্রুসজল চোখে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বিসর্জন দিয়েছেন দুর্গামূর্তি। প্রতিমা বিসর্জনের সময় বিশেষ নিরাপত্তায় কাজ করেছে র‌্যাব, পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।

বিজয়া দশমী উপলক্ষে মঙ্গলবার ছিলো সরকারি ছুটি। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারসহ স্যাটেলাইট টেলিভিশনগুলো বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করেছে। সংবাদপত্রগুলো প্রকাশ করেছে বিশেষ সংখ্যা ও নিবন্ধ।