বগুড়ায় বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে।
স্থানীয় বিএনপির দাবি, এই ঘটনায় তাদের ৭ নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ এবং আরও অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। আর পুলিশ বলছে, বিএনপির হামলায় তাদের ৫-৬ জন সদস্য আহত হয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে দুপক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয় বগুড়া।
স্থানীয়রা জানান, বেলা ১১ টায় বিএনপির নেতাকর্মীরা দুই অংশে ভাগ হয়ে পদযাত্রা শুরু করে। শহরের উত্তরপ্রান্ত মাটিডালি এলাকা থেকে জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশার নেতৃত্বে এক অংশ অপর অংশ দক্ষিণ বনানী এলাকা থেকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনার নেতৃত্বে পদযাত্রা শুরু হয়ে শহরে প্রবেশ করে। পদযাত্রা যখন শহরের ইয়াকুবিয়া মোড়ে আসে তখন পুলিশ তাদের মূল শহর সাতমাথায় প্রবেশ করতে বাধা দেয়। এতে কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে হাতে থাকা প্ল্যাকার্ড ছুড়তে থাকে পুলিশের দিকে। পরে পুলিশ কিছুটা পিছু হটলে পদযাত্রাটি পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে। তখন পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করলে নেতাকর্মীরা ইট ছুড়তে থাকে পুলিশের দিকে।
পরে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে গুলি ছোড়া শুরু করে। তখন নেতাকর্মীরা পিছু হটে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে পুলিশ শতাধিক রাউন্ড গুলি, টিয়ার শেল ছুড়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার সময় শহরের বনানী এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা একুৰিয়া স্কুলের কাছে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়।
পুলিশের অভিযোগ, এ সময় বিএনপির মিছিল থেকে পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। বিএনপির ইট-পাটকেল প্রতিহত করতে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এর পরে থেমে থেমে শহরে কয়েকটি জায়গায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়।
বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর হেনা বলেন, বর্তমানে শহরের নবাববাড়িতে বিএনপি জেলা কার্যালয়ে ৩০০-৪০০ নেতাকর্মী অবরুদ্ধ হয়ে আছেন।
তিনি বলেন, বনানী থেকে মিছিল নিয়ে আমার একুবিয়া স্কুলের কাছে গেলে পুলিশ আমাদের বাধা দেয়। এক সময় আমাদের ওপর টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে এই পর্যন্ত আমাদের ৭-১০ নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ এবং ৩০-৪০ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া পুলিশ সবখানে আমাদের নেতাকর্মীদের আটকও করছে।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুর রশিদ বলেন, পুলিশ কোন ধরনের উস্কানি বা বাঁধা দেয়নি বিএনপির পদযাত্রায়। কিন্তু হঠাৎ তাদের নেতাকর্মীরা পুলিশের উপর আক্রম করে। এতে পুলিশের ছয় সদস্য মারাত্মক আহত হন। তিনি বলেন, পদযাত্রা নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা সাতমাথায় যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু তাদের কথা ছিল ইয়াকুবিয়া মোড় হয়ে জলেশ্বরীতলা দিয়ে দলীয় কার্যালয়ে যাওয়ার। এরপরেও তারা জোর করে সাতমাথায় যাওয়ার চেষ্টা করে ও পুলিশের ওপর ইট, পাথর, লাঠি নিয়ে হামলা চালায়। সেই সময় পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হয়। এরমধ্যে ৫ থেকে ৬ জন গুরুতর আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে উপরের দিকে। বিএনপির কোনো কর্মীকে মারধর বা লাঠিচার্জ করা হয়নি বলে দাবি এই পুলিশ কর্মকর্তার।
দুপুর ১টার দিকে বিএনপির ছোড়া চোরা ককটেল বিস্ফোরণে ৪-৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছে পুলিশ।